বাংলাদেশে বায়ুদূষণে প্রতি বছর ৮৫০০ শিশুর মৃত্যু !
প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৩৬ | আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৫২
বাড়িতে ব্যবহৃত কাঠ বা গোবর পোড়ানো চুলার কারণে যে বায়ুদূষণের সৃষ্টি হয়, তাতে প্রতি বছর সাড়ে আট হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। এমনটাই জানিয়েছে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘরের ভেতরে বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে শিশুর মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। উন্নত রান্নার চুলা ব্যবহার তুলনামূলকভাবে সীমিত হওয়ায় কাঠ বা গোবর পোড়ানো চুলা থেকে সৃষ্ট ধোঁয়ার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিবেদনে এ সম্পর্কিত সচেতনতার অভাবকেও সমস্যা হিসেবে দায়ী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণের যে চিত্রও তুলে ধরা হয়, সেখানে দেখা যায়, কয়লা, কাঠ, গোবর ইত্যাদি জ্বালানি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া ও তাপে ঘরের বায়ু দূষিত হয়। গ্রামাঞ্চলের স্বল্প আয়ের পরিবারের শিশুরাই এর সবচেয়ে বড় শিকার। এর ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে আট হাজার শিশুর মৃত্যু হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে এখনও শতকরা ৮৯ শতাংশ বাড়িতে রান্নার কাজে কাঠ ও গবাদিপশুর গোবর শুকিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। ঘর গরম করার জন্যও এসব ব্যবহার করা হয়।
বিষাক্ত ধোঁয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুপ্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে শিশুরা বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ, তারা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়। এ ছাড়া শিশুদের ফুসফুসের কোষের স্তর দূষিত কণায় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি দ্রুত দূষিত কণা মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহের ঝিল্লি ভেদ করে। এতে শিশুর বুদ্ধির বিকাশে স্থায়ী ক্ষতিসাধিত হয়। এমনকি দূষিত বায়ুতে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ভ্রূণও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে ইউনিসেফের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি সাতজন শিশুর একজনই এমন এলাকায় বসবাস করে, যেখানকার বাতাস ভয়াবহ পরিমাণে দূষিত। আর ওই বায়ুদূষণের শিকার শিশুদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশিয়ার বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
ইউনিসেফ-এর ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বে বায়ুদূষণের শিকার শিশুর সংখ্যা ৩০ কোটি। এর ফলে মস্তিষ্কের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিতে ক্ষতিসহ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পতিত হতে পারে ওই শিশুরা। প্রতিবছর ঘরের ভেতর এবং বাইরের বায়ুদূষণের ফলে ছয় লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়, যাদের বয়স পাঁচ বছরেরও কম।