'পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি শহরমুখী'
প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:০৩
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি শহরমুখী হচ্ছে। শহরমুখী এই প্রবণতা মূলত দেশের দুই বড় শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামের দিকে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার রাজধানীতে এক সেমিনারে ‘আর্বানাইজেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানায় ইউএনএফপিএ।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিখ্যাত জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ডেমোগ্রাফকি ইমপ্যাক্ট স্টাডি (ডিআইএস) এর প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক গেভিন জোনসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এই গবেষণা কার্যক্রম চালায়।
গবেষক দলের বাকি দুই সদস্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব এবং দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. ইজাজুল হক রয়েছেন।
এই গবেষণা মূলত ২০১১ সালের সর্বশেষ আদমশুমারিসহ বিগত বছরগুলোর আদমশুমারির তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে করা হয়।
গবেষণায় বলা হয়, শহরমুখী নারীদের মধ্যে ১০ থেকে ২৯ বছর বয়সী বালিকা ও তরুণীদের সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে। ঢাকা শহরমুখী ১০০ জন পুরুষের বিপরীতে শহরমুখী নারীর সংখ্যা ১৬৭ জন; অন্যদিকে চট্টগ্রামে ১০০ জন পুরুষের বিপরীতে শহরমুখী নারী ১৬৬ জন।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের চিরাচরিত পুরুষাধিপত্যবাদী গ্রামের সমাজের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ‘উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন’ বলে মন্তব্য করেছেন গবেষকরা।
তারা বলছেন, অল্প বয়সী নারীদের জন্য তৈরি পোশাক খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তাদের এই শহরমুখীতা বাড়ার পেছনে একটি বড় কারণ বলে ধরা যায়।
ইউএনএফপিএ বলছে, গভীরভাবে নগরায়ন ও অভিবাসন এবং এর প্রভাব খতিয়ে দেখতে এই গবেষণা করা হয়। এতদিন ধরে চলা পুরুষদের শহরমুখী ধারার বিপরীতে নারীদের বেশি করে শহরমুখী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন প্রকাশ করছে।
সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি আর্হেন্তিনা মাতাবেল পিচথিন বলেন, “নারী ও তরুণীদের নতুন সুযোগ-সুবিধা দিতে না পারার পরে এই (শহরমুখী) ধারা নতুন অনেক চ্যালেঞ্জ সঙ্গে নিয়ে এসেছে, যাতে নগর প্রশাসক, নীতি-নির্ধারকসহ কর্মজীবীদের নজর দিতে হবে।”
গবেষকরা নারীদের শিক্ষা, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে- যেখানে মেয়েদের হার এখনও কম তাতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর আহ্বান জানান। এতে তারা শহরে আরও আকর্ষণীয় চাকরি নিতে পারে।
এছাড়া নারী শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও বিনোদনের ব্যবস্থাসমৃদ্ধ বাসস্থান এবং নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিতের আহ্বানও জানানো হয়, যেখানে যৌন হয়রানির শিকার হতে হবে না।