‘হুমকি দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা যাবে না’
প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০১৬, ০২:৪৫ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬, ০৩:০০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদকে মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ অক্টোবর (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘লেখক, শিল্পী, শিক্ষক, ছাত্র ও সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ’ এই ব্যানারে প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সমাবেশে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, জনগণের কোটি কোটি টাকা খরচ করে নিরাপত্তার নামে মোবাইল সিম নিবন্ধন করানো হয়েছে। এরপরও কেন ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম হওয়ার পরেও হুমকিদাতার পরিচয় পাওয়া যায়নি?
সমাবেশে কবি ও লেখক শেখ বাতেন বলেন, “আনু মুহম্মদ তো কারো বাড়া ভাতে ছাই দিচ্ছেন না। তিনি তো সরকার উৎখাতের আন্দোলন করছেন না, তাহলে তার পেছনে লাগার কারণ কি? আনু মুহাম্মদ ফুলবাড়ি আন্দোলনে ছিলেন। তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই বলেছিলেন, আনু মুহাম্মদ পরিবেশের জন্য কাজ করছেন। তাহলে আজ এই বৈরিতা কেন?”
প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, “আনু মুহাম্মদের হুমকিদাতাকে চাইলে খুব দ্রুত খুঁজে বের করা সম্ভব। সমস্ত প্রযুক্তি সরকারের নিকট রয়েছে। তাহলে সমস্যা কোথায়? একই নম্বর থেকে সাহিত্যিক মইনুল আহসান সাবেরকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। একই সিম, চিহ্নিত সিম অথচ হুমকিদাতারা অদৃশ্য”।
সাবেক ছাত্রনেতা আকরামুল হক বলেন, “সেলিম আল দীন এর মুনতাসির ফ্যান্টাসি নাটকে মুনতাসির যেমন যা পায় তাই খেতো, এই সরকারও তেমনই সব খাওয়া শুরু করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, শেয়ার বাজার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সব তারা খেয়ে ফেলছে। এখন সুন্দরবনও খেতে চাইছে। আরে এর বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে তাদের হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তার করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ আমরা দেখছি না”।
সমাবেশ থেকে বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, যদি মৃত্যু হুমকিদাতাকে খুঁজে বের নাই করা যায় তাহলে নিরাপত্তার নামে সিম নিবন্ধন কেন করানো হয়েছে? বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যেহেতু সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় যেহেতু বাংলাদেশের যে কোনো মোবাইল অপারেটরের সিম কে ব্যবহার করছেন কিংবা কার নামে বরাদ্দ তা সহজেই বের করে ফেলা সম্ভব তাহলে সরকার সেটা কেন করছে না?
দ্রুত হুমকিদাতাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানান নাগরিক সমাবেশের বক্তারা।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহ এর পরিচালনায় নাগরিক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারি নেত্রী মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা ঢাকা কমিটির নেতা খান আসাদুজ্জামান মাসুম, বাউল অরুপ রাহী, লেখক ইফতেখার আহমদ বাবু, সাবেক ছাত্রনেতা আকরামুল হক, শিক্ষক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, ছাত্রনেতা ইমরান হাবিব রুমন, ছাত্রনেতা সৈকত মল্লিক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ১টার দিকে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ‘আনসারুল্লাহ’ নামে একটি সংগঠনের বরাত দিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে তিনি একটি স্ট্যাটাস দেন। পরদিন রামপুরা থানায় বসে হুমকির বিরুদ্ধে জিডি করার মুহুর্তে তার মোবাইলে দ্বিতীয় দফায় হত্যার হুমকি আসে।