খাদিজার পাশে সেলফি, ফেসবুকে নিন্দার ঝড়

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৯:৩০

অনলাইন ডেস্ক

সিলেট এমসি কলেজে চাপাতির কোপে গুরুতর আহত ও মরণাপন্ন কলেজ ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে দেখতে যেয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রীদের সেলফি তোলা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে ফেসবুকে। একে কমনসেন্সবিহীন মানসিক বিকার বলে অভিহিত করছেন অনেকে।

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা খাদিজাকে দেখতে বুধবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নারী নেত্রী। হাসপাতাল থেকে ফিরে বুধবার সন্ধ্যে ৭টার দিকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ অপু উকিল ও আরেকজন নারীসহ আইসিইউতে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিন। সেলফিতে দেখা যায়, গায়ে আইসিউইউ গাউন পরে আছেন নারী নেত্রীরা। পেছনে বিছানায় শুয়ে থাকা খাদিজার অচেতন দেহ। 

আইসিইউ এর মতো স্পর্শকাতর জায়গায় ও নৃশংস হামলার শিকার খাদিজার জীবনের এই সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় সরকার দলীয় নারী নেত্রীদের এমন ছবি তোলার ঘটনায় সমালোচনার ও নিন্দার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সাবেক ছাত্র নেতা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আকরামুল হক লিখেন, 

'ছাত্রলীগ কর্মী বদরুল কর্তৃক হামলায় মরণাপন্ন খাদিজাকে দেখতে গিয়ে নেত্রীদের সেলফি ! 
এরশাদ আমলে শফিক রেহমান'এর সাপ্তাহিক যায় যায় দিন'এ প্রচ্ছদ হয়েছিল 'সংসদের তিরিশ সেট অলংকার'।
বাংলাদেশ তোমার কোন পরিবর্তন এখনও ঘটেনি।
টের পাও কী স্বদেশ আমার ?
ছি:.......'

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহমুদা খাঁ লিখেন, 'আমি নির্বাক। খাদিজা একটা বিপজ্জনক সময় পার করছে আর এই নেত্রীরা সেলফি তুলছেন! তাদের কি কোন কমনসেন্স নেই?'

প্রশ্ন উঠেছে আইসিইউতে মোবাইল কিংবা ক্যামেরা নিয়ে ঢুকা কিভাবে সম্ভব হলো সেই ব্যাপারেও। 

সিলেটটুডে২৪ এর বার্তা সম্পাদক একুশ তাপাদার নেত্রীদের সেলফি তোলার খবর শেয়ার দিয়ে লিখেন, 'আইসিইউতে মোবাইল, ক্যামেরা নিয়া ঢুকা বারণ বলে জানতাম'।

ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাবেক সভাপতি মারুফ বিল্লাহ তন্ময় লিখেন, 'সেলফি তোলা তো আসলে অনেক পরের ব্যাপার আমার প্রশ্ন হচ্ছে এরকম জীবন মৃত্যুর সংকটে থাকা একজনকে দেখতে দলে দলে হাসপাতালে রোগীর রুমে ভীড় জমাবার কী হইল!! ডাক্তার নিজেই যেখানে সন্দিহান রোগী বাঁচবে কিনা সেখানে এত লোক তার রুমে ভীড় করার দরকারটা কী? যদি একান্তই কিছু করার থাকে তা হল তার পরিবারকে সময় দেয়া তাদের পাশে থাকা।
তনু, আফসানাদের আমরা হারিয়েছি অন্তত এই খাদিজা মেয়েটাকে বাঁচতে দিন আপনারা। ওর রুমে ভীড় না করে চিকিৎসা ভালোভাবে যাতে হয় সেদিকে মনোযোগ দিন দয়া করে'।

তবে সেলফি নয় বরং এটা তৃতীয় একজনের তোলা স্বাভাবিক একটা ছবি ছিল বলে দাবি করেছেন সরকারদলীয় নারী সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুহিন লিখেছেন, 'ছবিটি সেলফি নয় বরং বের হওয়ার সময় এক ছোট ভাই তুলে দিয়েছে'। আরেক স্ট্যাটাসে কোন ভুল হয়ে থাকলে সকলের কাছে ক্ষমা চান এই নেত্রী।