মায়ের জন্য কাঁদছে খাঁচায় বন্দি জাহাঙ্গীর (ভিডিও)
প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ০১:০৫ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ০৩:১৫
“আমার ভাল্লাগে না এখানে, আমার বাবা মায়ের কথা খুব মনে হয়। আমার দাদা এসে বাড়ি নিয়ে যাবে। দাদা আসেনি এখনো। আসলে আমি বাড়ি যাবো”- কথাগুলো ১০ বছর বয়সী এক শিশুর। হাতির ঝিলের পাশে মগবাজার এলাকায় এক বাড়িতে কাজ করে সে।
রবিবার বিকেলে ফোন আসে জাগরণীয়ার অফিসে। জানানো হয়, ৩৮/ক, প্রিয়াংকা শ্যুটিং স্পটের পাশে সালামের বাড়ি নামে পরিচিত একটি ফ্লাটে এক শিশুর অবিরত কান্নার কথা। জাগরণীয়ার পক্ষ থেকে তার বক্তব্য ধারণ করতে গেলে কেঁদে কেঁদে হাত জোড় করে বাড়ি ফেরার আকুতি জানায় শিশুটি। যে বয়সে একটি শিশুর মাঠে বন্ধুদের সাথে হেসেখেলে, রাতে মায়ের কোলে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে দিন পার করার কথা, সেই বয়সে ঢাকা শহরের একটি বাসায় বন্দি হয়ে তার চোখেমুখে রাজ্যের ভয় আর মা বাবা হীন দিন যাপনের কান্না।
পরে ভিডিও ক্যামেরায় বন্দি করা হয় সেই শিশুর বক্তব্য। কেঁদে কেঁদে জানায় বাড়ি ফিরতে চায় সে। কথা বলার মধ্যেই ভয়ে ভয়ে এদিক সেদিক তাকায় শিশুটি।
বাড়ি চলে যাওয়ার কথা বাসার মালিককে জানিয়েছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে শিশুটি বলে, “আমার জ্যেঠি এখানে আসবে মঙ্গলবার। জ্যেঠি আসলে বলবো”।
কথা বলার মাঝেই জানতে চায় তার কথা ভিডিও করা হচ্ছে কিনা। তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়ার জন্য এই ভিডিও টিভিতে দেয়া হবে এমন কথায় যেন এক মুহুর্তের জন্য আশান্বিত হয়ে উঠে তার চোখমুখ। বাড়ি ফিরে যাওয়ার আশায় নিজের পরিচয় জানায় সে।
শিশুটি বলে, “আমার নাম জাহাঙ্গীর আলম, পিতার নাম আইয়ুব, মায়ের নাম জাহানারা। বোনের নাম আরিফা, ভাইয়ের নাম জাহিন”।
সে জানায়, তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। বাবা পানের দোকানদার।
শিশু জাহাঙ্গীর আরো জানায়, তার জ্যেঠির ছেলে তাকে এই বাড়িতে কাজ করার জন্য নিয়ে আসে। তার জ্যেঠির নাম ফুলী। জ্যেঠির ছেলের নাম রঞ্জু। সে বোর্ডবাজার বড় মসজিদের কাছে থাকে।
বাড়ি যাওয়ার আকুতি জানিয়ে জাহাঙ্গীর এই প্রতিবেদককে বলে, “আমার কাজ করতে ভাল্লাগে না। বাবা মায়ের কথা মনে পড়লে খুব কষ্ট হয়”।
ভাঙা আঙুল দেখিয়ে জাহাঙ্গীর বলে, “আঙুলে খুব ব্যথা পাইছি। আমার বাবা মা যদি আসতো তাহলে বাড়ি যাইতাম গা”।
জাগরণীয়ার মাধ্যমে নিজের বাবা মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছে শিশু জাহাঙ্গীর। এই শিশুকে তার বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ রইলো।