নির্যাতনের ২৬ দিনেও মামলা করতে পারেনি গৃহবধূ
প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৩:৪২
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বিলকিস বেগম ২৬ দিনেও মামলা করতে পারেননি। বরং প্রভাবশালী মহলের হুমকিতে হতদরিদ্র গৃহবধূ চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবন-যাপন করছে।
৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে নির্যাতিত গৃহবধূর স্বজনেরা সাংবাদিকদের জানায়, রামগঞ্জ থানার এস.আই জহিরুল হক ২০ আগস্ট উত্তর শ্রীরামপুর ছৈয়াল বাড়ির একটি মামলা তদন্তকালে গৃহবধূ বিলকিস বেগমের স্বাক্ষ্য নেয়। স্বাক্ষী দেওয়ার অপরাধে মামলার আসামী ছৈয়দ আহমেদ, তার পুত্র কাউছার ও বাহার আলমের পুত্র শান্ত গৃহবধূ বিলকিস বেগমকে বেধম প্রহার শেষে শরীরে গরম পানি ঢেলে দেয়। এতে গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। এলাবাসীর সহযোগিতায় গৃহবধূর চিকিৎসা চললেও প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকিতে থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা করতে পারেনি।
গৃহবধূ বিলকিস বেগম বলেন, "থানার এস.আই জহিরুল হক গ্রাম থেকে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে গ্রামের তাহের আহমেদের চা দোকানের সামনে ২০ আগস্ট বিকেলে প্রকাশ্যে তারা আমাকে মারধর শেষে বিবস্ত্র করে গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয়। ঘটনার পর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারী নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আসতে বাধ্য করে। সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারীর ইন্ধনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারছি না"।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারীর সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তার পুত্র মোঃ মিলন পাটোয়ারী মুঠো ফোনে বলেন, গৃহবধূ বিলকিস বেগমের ভাই সহেল একজন চিহ্নিত চোর। গ্রামাবাসী একত্রিত হয়ে চোরের বিচার করলে কয়েকজন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চোর সহেলের স্ত্রী মিথ্যা মামলা করে। ওই মামলাতে বিলকিস বেগম মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়া নিয়ে বাক-বিতণ্ডের মাঝে ধাক্কা খেয়ে চা-দোকানের গরম দুধে পড়ে হাত ঝলসে যায়।
ওসি তদন্ত মোঃ সোলাইমান চৌধুরী বলেন, "ঘটনাটি কেউ আমাদের জানায়নি। গৃহবধূর স্বজনেরা থানা লিখিত এজাহার অথবা অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো"।