পুলিশের পোস্টারে এক পরিবারের ৬ ‘জঙ্গি’
প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৭:২৯
সন্দেহভাজন পাঁচ জঙ্গির তালিকা প্রকাশের পর এবার ১১ জনের নামে পোস্টার ছাপিয়ে তাদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যশোর পুলিশ। নতুন এ তালিকায় রয়েছেন চার ভাই-বোনসহ এক পরিবারের ছয় জন। আগের তালিকারও দুজন রয়েছেন এখানে।
মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান সংবাদকর্মীদের এ তথ্য দেন।
এসপি আনসুর বলেন, সম্প্রতি যশোর পুলিশ পাঁচজনকে জঙ্গি উল্লেখ করে তাদের নাম-ছবি-ঠিকানাসহ পোস্টার ছেপেছিল। সেই জঙ্গি তালিকার এক নম্বরে থাকা ব্যক্তি দুইদিন পর নববধূকে নিয়ে যশোর ফিরে হাজির হন কোতয়ালি থানায়। পুলিশ তদন্ত করে তার জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতা পায়নি। বর্তমানে ওই তরুণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। এছাড়া আগের তালিকায় থাকা রাব্বি নারায়ণগঞ্জে পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন। অন্যরা পলাতক।
পুরনো তালিকার দুইজনের নাম বর্তমান তালিকায় স্থান পেয়েছে বলেও তিনি জানান।
পুলিশের পোস্টারে আটজনের ছবিসহ পরিচয় রয়েছে। অপর তিনজনের পরিচয় থাকলেও ছবি দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে তালিকায় থাকা এক পরিবারের ছয় জন সদস্য হলেন- যশোর শহরের পুরাতন কসবা কদমতলার আব্দুল আজিজের ছেলে তানজিব ওরফে আশরাফুল, তার ভাই তানজির আহমেদ, বোন মাসুমা আক্তার ও মাকসুদা খাতুন, মাকসুদার স্বামী শাকির আহম্মেদ ও মাসুমার স্বামী নাজমুল হাসান।
এদের মধ্যে তানজিব হিযবুত তাহরীরের মোশরেক পদে রয়েছেন এবং বাকিরা একই সংগঠনের কর্মী বলে এসপি জানিয়েছেন।
বাকি পাঁচজন হলেন- রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৭ নম্বর বাড়ির মুসাব্বির ওরফে প্রকাশ ওরফে তন্ময় (৩০), ঢাকার আশকোনা দক্ষিণখান ৪০১ কলেজ রোডের হারেজ আলী (২৭), যশোরের মণিরামপুরের জিএম নাজিমউদ্দিন ওরফে নকশা নাজিম, চাঁচড়া বেড়বাড়ির মহিউদ্দিন এবং শার্শার মেহেদি হাসান ওরফে জিম ওরফে হুসাইন।
এসপি আনিসুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে ‘জঙ্গি’ তানজিবের বাসাতেই প্রশিক্ষক তানজিব ও হারেজ আলী অন্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন।
সম্প্রতি যশোর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করা হিযবুত তাহরীরের চার সদস্যও একই স্থানে প্রশিক্ষণ নিতে যেতেন বলে জানান আনিসুর।
তিনি বলেন, গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর তানজিবকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু আদালতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কৌঁসুলি তার ‘জামিনের বিরোধিতা না করায়’ গত মে মাসে তাকে জামিন হয়ে যায়। এছাড়া তানজিবের ভাই তানজির আহমেদ ও বোন মাসুমা আক্তারকেও একটি ল্যাপটপসহ আটক করে পুলিশ। এই দুই মামলাতেও সংশ্লিষ্ট সরকারি কৌঁসুলিরা জামিনের বিরোধিতা না করায় আদালত তাদের জামিন দিয়ে দেয়। তিনজনই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন”।
তিনি বলেন, “আমরা রায়ের অনুলিপি তুলে দেখেছি। সরকারি কৌঁসুলিরা জামিনের বিরোধিতা না করায় আসামিদের জামিন দেওয়ার কথা লিখেছেন বিচারকরা।”
তানজিবের পক্ষে যশোর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রত্যায়নপত্রও দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়গুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।