নারায়ণগঞ্জে জঙ্গিনেতা তামিমসহ নিহত ৩
প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৬, ১৩:৩৯ | আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০১৬, ১৬:৫৭
নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা 'গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী' তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় বড় কবরস্থানের পাশের একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযানে নামে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, “ঢাকা থেকে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাইকপাড়ার একটি বাড়ি ঘিরে এই অভিযান চালাচ্ছে।”
এরপর অভিযানে র্যাব ও জেলা পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। ভোর থেকে ঘিরে রাখার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়।
সেখানে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন তখন সাংবাদিকদের বলেন, “ভবনটির ভেতরে ঢুকতে অভিযান শুরু হয়েছে।”
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির পর শব্দ কমে আসে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে থাকা তামিমসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন। কিছুক্ষণ পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও তিনজনের মধ্যে তামিমের থাকার খবর খবর নিশ্চিত করেন ও বাকি দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান।
সন্ত্রাস দমনে গঠিত ডিএমপির এই শাখার প্রধান মনিরুল বলেন, “জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে এই আস্তানার খোঁজ মেলে। এরপর এখানে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টুয়েন্টি সেভেন’ চালানো হয়।”
অভিযান শেষ হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানালেও পাইকপাড়ার ওই এলাকা বেলা ১১টার দিকেও ঘিরে রাখা ছিল। সেখানে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে।”
উল্লেখ্য, গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম এসেছিল। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০)কে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল। ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে গত ২ অগাস্ট জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল। কানাডা থেকে আসার পর তামিম বাংলাদেশেই ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন।
গোয়েন্দাদের দাবি, তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে। তবে আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন। তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।
গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন।