'জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলেনি ‘জাহাজ বাড়ি’র মালিকের স্ত্রী-ছেলের'

প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৬, ০২:২৫

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর কল্যাণপুরে অভিযান চালিয়ে ৯ জঙ্গি নিহত হওয়ার সেই ‘জাহাজ বাড়ি’ বলে পরিচিত তাজ মঞ্জিলের মালিকের স্ত্রী মমতাজ পারভীন ও ছেলে মাজহারুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের এই বাড়িটির পঞ্চম তলার একটি মেসে গত ২৬ জুলাই সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি নিহত হন। এছাড়া হাসান নামে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে পুলিশ। জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পর থেকেই পালিয়ে রয়েছেন তাজ মঞ্জিলের মালিক আতাহার উদ্দিন আহমেদ। এরপরই ভবনটির মালিকের স্ত্রী ও ছেলেসহ মাহফুজুল আনসার, মমিন উদ্দিন ও জাকির হোসেন নামে মোট পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও পায় পুলিশ।

৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর দুইদিনের রিমান্ডে আনা হলেও জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে শুক্রবার জানান মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি বলেন, “অভিযানের সময় পুলিশের কাজে বাধা এবং তথ্য গোপন করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই দুইদিনের রিমান্ড শেষ করে এই পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কারাগারেই রয়েছেন তারা। এই সময়ের মধ্যে তদন্তেও তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি"।

মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, "প্রত্যেক ভাড়াটিয়ার তথ্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করার জন্য মহানগর পুলিশ থেকে বাড়ির মালিকদের যে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তারা সেটা মানেনি। তাছাড়া ওই বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় তারা যথেষ্ট সহায়তা করেননি"।

পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন বলেন, “জঙ্গির সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে এটা আমরা কখনোই বলিনি। তাছাড়া এখন পর্যন্ত তদন্তে এ ধরনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”

তবে তাজ ভবনের মালিক আতাহার উদ্দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত বলে গত ২৩ অগাস্ট রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কল্যাণপুর ঘটনার পর ওই বাড়িতে যাতায়াতকারী মিরপুরের এক বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তারের পর নিহত জঙ্গিদের অর্থ সহায়তাকারী হিসেবে মামলায় জড়ানোর ‘ভয় দেখানো হলে’ পাঁচ লাখ টাকায় পুলিশের সঙ্গে বিষয়টির রফা হয় বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার।

এর আগে গুলশানের হামলাকারী জঙ্গিরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার যে বাড়িতে অবস্থান করেছিলো সেই বাড়ির মালিক বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহসানসহ চারজনকে একই রকম অভিযোগে প্রেপ্তার করে পুলিশ। ভাড়াটিয়ার তথ্য না দেওয়া ও বাড়িওয়ালার জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাদেরও রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে কারও বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।