ময়নাতদন্তে ‘আত্মহত্যার ধারণা’, পরিবারের দাবি হত্যা
প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৬, ১৩:৫৫ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০১৬, ১১:৩৫
মিরপুর সাইক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী আফসানা ফেরদৌসের মৃত্যুর ঘটনার ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল খায়ের মোঃ সফিউজ্জামান জানিয়েছেন আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে তিনি কেবল গলার দাগ দেখে এই মন্তব্য করলেও এবিষয়ে মোঃ সফিউজ্জামান বলেন, ভিসেরা রিপোর্ট এলে বাকিটা বোঝা যাবে। সেটার জন্য সময় লাগবে।
এদিকে ময়নাতদন্তের খবর পাওয়ার পর ‘আত্মহত্যার’ দাবি প্রত্যাখ্যান করে আফসানার ভাই ফজলে রাব্বী বলেন, আমরা হতভম্ভ। এলাকাবাসী যখন বলছে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনতে পেয়েছে তখন কীভাবে ময়নাতদন্তে এটা আত্মহত্যা বলা হলো? আমি বিশ্বাস করি না আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর তার বন্ধু হাবিবুর রহমান রবিন যে আচরণ করেছে এবং সমঝোতার চেষ্টা করেছে সেটার পর আত্মহত্যা ভাবার কোনও কারণ দেখি না।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, এটা আত্মহত্যা না হত্যা এখনই বলতে চাই না। সেটা মন্তব্য করা হয়ে যাবে। তবে শ্বাসরোধে নিহত হয়েছেন তিনি।
এদিকে, আফসানা ফেরদৌস নিহত হওয়ার পর থেকেই ছাত্রলীগের তেজগাঁও কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন লাপাত্তা। গত শনিবার থেকেই কলেজে আসছেন না দাবি করেছেন অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর কলেজে সক্রিয় নেতা রবিনকে এখন আর নিজেদের কেউ বলে স্বীকারও করছে না ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ আগস্ট (শনিবার) বিকেলে দু’জন যুবক সিএনজিতে করে আফসানাকে নিয়ে হাসপাতালের আসে। তবে জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য স্ট্রেচার নিয়ে আসতে বলে তারা সিএনজির ভাড়া মেটাতে যাচ্ছে বলে সটকে পড়ে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আফসানা সক্রিয়ভাবে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী থাকায় সংগঠনটি ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এদিকে নিহতের ঘটনার পর থেকে তার পরিবারের কাছে টেলিফোনে ‘সমঝোতার প্রস্তাব’ যায় তেজগাঁও কলেজের সাংগাঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রুবেলের পক্ষ থেকে। এরপরই আফসানার পরিবারের শঙ্কা, ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা হওয়ায় বিভিন্ন রিপোর্ট ও তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারেন রবিন।
তবে ১৭ আগস্ট (বুধবার) থেকে সবকটি গণমাধ্যমে সংবাদ ও ফোন নম্বরগুলো প্রকাশিত হওয়ায় আর কোনও ‘সমঝোতা’র জন্য ফোন আসেনি উল্লেখ করে আফসানার ভাই ফজলে রাব্বী বলেন, বোনের সঙ্গে আমার শেষ যা কথা হয়েছে তাতে করে সে আত্মহত্যা করার মতো পরিস্থিতিতে ছিল না। সে আমার সঙ্গে ঈদের পরিকল্পনা পর্যন্ত করেছে।