সুন্দরবন রক্ষায় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৬, ১৯:৪২

অনলাইন ডেস্ক

‘রামপাল চুক্তি ছুড়ে ফেলো, সুন্দরবন রক্ষা করো’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাম ধারার বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। প্রয়োজনে রাজনৈতিক গতিধারা পরিবর্তন করে হলেও রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করা হবে বলে ওই কর্মসূচি থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়। শনিবার (২০ আগস্ট)  বেলা সোয়া ১১টায় তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, রামপালে এই কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। যে আন্দোলনের জাগরণ সারা দেশব্যাপী আমরা সূচনা করেছি সেটা স্তব্ধ হবে না। সেই আগুনে রাজনীতির পরিণতি কী হবে সেটা সরকারকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। রাজনীতিতে পরিবর্তন এনে হলেও আমরা সুন্দরবনকে রক্ষা করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। প্রধানমন্ত্রী আপনি এটা জেনে রাখবেন।

সুন্দরবনকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার সংগ্রামে দল-মত নির্বিশেষ সকলকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আগামী দিনের রাজনীতি কোন পথে যাবে আমি জানি না। দেশবাসী চূড়ান্তভাবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে, একদিন না একদিন দেশে বামপন্থীদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। তথ্য-প্রমাণ দিয়ে তা প্রমাণ করা হয়েছে। আমাদের এই সংগ্রাম বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে নয়, এই সংগ্রাম সুন্দরবন রক্ষার জন্য।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরও বলেন, আমার বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সুন্দরবন দুটোই চাই। তাই রাজনীতির পরিবর্তন করে হলেও রামপাল প্রকল্প বন্ধ করা হবে। এ জন্য বিদ্যুৎ সমস্যার টেকসই সমাধানে জাতীয় কমিটির দেওয়া সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। বক্তব্য শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বাঁ পাশে একটি মুক্ত ক্যানভাসের উদ্বোধন করা হয়। এখানে বিভিন্নজন মন্তব্য করতে পারবেন। অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটি, গণসংহতি আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সুজন, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন।

অবস্থানে বাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূইয়া বলেন, “একদিকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন, অন্যদিকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করবেন- এটা বন্ধ করেন। অতীতের আন্দোলনের কথা স্মরণ করে এই প্রকল্প থেকে সরে আসেন। তা না হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।“এরপর বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক অবস্থার গতি পরিবর্তনও ঘটে যেতে পারে। সে বিষয়টা মাথায় রাখবেন।”

এসময় অন্যদের মধ্যে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

সকালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অবস্থানে প্রতিবাদী গান, নাটিকা, মুক্ত ক্যানভাসে ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনের সাথে সাথে বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।