জোটেনি উপহারের ঘর

তালপাতার ঘরে দিন পার দৃষ্টিশক্তি হারানো বিধবা রূপবান বিবির

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:২৭ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:০৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

উপহারের ঘর জোটেনি এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানো বিধবা রোকেয়া ওরফে রূপবান বিবির (৬০) কপালে। তাইতো তালপাতার ছাউনি আর ছেড়া কাপড় দিয়ে ঘেরা বেড়ার ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে। নিঃসন্তান রোকেয়া ওরফে রূপবান বিবি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী গ্রামের মৃত ছলিউদ্দিন শেখের স্ত্রী।

জানা গেছে, নিঃসন্তান রুপবান বিবি স্বামীর মৃত্যুর পরে তার রেখে যাওয়া ১০ শতক জমিতে বসবাস ও অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বর্তমানে বয়সের ভারে ও এক চোখের দৃষ্টি হারানোয় তাতেও ভাটা পড়েছে। একদিকে খাওয়ার কষ্ট, অন্যদিকে তাল পাতার ছাউনি আর ছেড়া কাপড় দিয়ে ঘেরা বেড়ার ঘরে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে তার।

রুপবান বিবি বলেন, জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে বসাবস করি। আমার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তীব্র শীতের দিনে কুয়াশার পানিতেই ভিজে যায় কাঁথা, বালিশ, মশারি। বৃষ্টির দিনে তো কোনো কথাই নেই। জরাজীর্ণ তাল পাতার ছাউনি দিয়ে দেখা যায় পুরো আকাশ। আমি টাকা দিতে পারি না বলে আমার ঘর হয় না। কত মানুষের কাছে গিয়েছি একটা ঘর পাওয়ার জন্য, কিন্তু সবাই বলে খরচের টাকা লাগবে? কৈ পাব আমি টাকা।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে দেখার মতো কেউ নেই আমার। চোখ হারানোর পর এক ভাতিজা কোনো রকমে একটু দেখে, তাও সে অনেক দূরে থাকে। সরকারিভাবে যদি একটা ঘরের ব্যবস্থা করতো, তাহলে খাই আর না খাই শান্তিতে ঘুমাইতে পারতাম।

স্থানীয় কাওছার আলী বলেন, তার দুনিয়ায় আপন বলতে কেউ নেই। হিসেবে অনুযায়ী সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার কথা তার। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই তাকে যেন থাকার একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, তার বিষয়ে জানতে পেরেই সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে খোঁজখবর নিতে বলেছি। তাকে দ্রুত ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, তার যদি থাকার ঘর না থাকে, তাহলে আমরা অবশ্যই তাকে ব্যবস্থা করে দেব।

জাগরণীয়া.কম/এসএস