তনু হত্যা: ৫ মাসেও শনাক্ত হয়নি ঘাতকরা
প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৬, ১৯:৪০
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ৫ মাস পূর্ণ হলো শনিবার (২০ আগস্ট)। এ সময়ে এসে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্যক্রমও যেন স্থবির হয়ে গেছে। বেশ কিছুদিন যাবত সিআইডিও নীরব। এদিকে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় তিন ধর্ষকের শুক্রাণু পাওয়া গেলেও ঘাতকদের গ্রেপ্তারে বা মামলার তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এ নিয়ে তনুর বাবা-মা ও স্বজনরা মামলার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পাওয়ার হাউজ এলাকার একটি জঙ্গলে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদি হয়ে ২১ মার্চ কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ঘাতকদের বিরুদ্ধে হত্যামামলা করেন। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের আজ ৫ মাস পূর্ণ হলেও এ পর্যন্ত ঘাতকদের শনাক্ত বা আসামি গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। সিআইডি সন্দেহভাজনসহ সামরিক-বেসামরিক অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিলেও হত্যাকান্ডের সাথে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার হয়নি। এছাড়া এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন বা ডিএনএ নমুনায় ৩ জন ধর্ষণকারীর শুক্রাণু পাওয়া গেলেও ডিএনএ নমুনা ম্যাচিং কার্যক্রমও শুরু করতে পারেনি সিআইডি।
সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. মো. নাজমুল করিম খান বদলীর পর গত ২৫ জুলাই এ পদে যোগদান করেন শাহরিয়ার রহমান। তিনি তনুর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘাতকদের গ্রেপ্তারে তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এদিকে গত ৪ এপ্রিল ও ১২ জুন দুই দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে না পাওয়া, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে মেলানোর (ম্যাচ) কার্যক্রম শুরু করতে না পারা, প্রথম তদন্ত তদারক কর্মকর্তার বদলি এবং মামলার তদন্তেও কোনো অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তনুর বাবা-মা।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ৫ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও খুনীদের কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হলো না। সিআইডির উপর আস্থা রাখতে চাই, এছাড়া আর কি করার আছে। জানি না মেয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার বা বিচার দেখে যেতে পারবো কি-না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন আছে, তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার নিকট থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করেন তার বাবা ইয়ার হোসেন। পরদিন ২১ মার্চ দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ২১ মার্চ তনুর বাবা কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলা পুলিশ, ডিবি হয়ে সিআইডির হাতে যায়।