বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন বাবা-মেয়ের
প্রকাশ | ১৩ মে ২০২০, ১৫:৩১ | আপডেট: ১৩ মে ২০২০, ১৯:৫৭
বাংলাদেশি ডাক্তার বাবা-মেয়ে যুগলবন্দী হয়ে সফলভাবে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন করেছেন। যার ফলে ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি নির্ণয় করা সহজ হবে গবেষকদের জন্য এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য প্রতিষেধক তৈরির সম্ভাবনাকে সহায়তা করবে।
ডা. সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) আট সদস্যের একটি গবেষক দল জিনোম সিকোয়েন্সের ম্যাপিংয়ের কাজ করেন।
চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. সমীর কুমার সাহা ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাইল্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক ডা. সেঁজুতি সাহা যৌথভাবে তাদের কৃতিত্বের কথা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন। সিএইচআরএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই ঘোষণা দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ আক্তারুজ্জামান এই বিষয়ে বলেন, জিনোম সিকোয়েন্স করা এখন রোগের মূল অনুসন্ধানের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। একে বলা হয় ‘জিনোমিক প্রেডিকশন’।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি ভাইরাস সংক্রমণ যখন জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তখন সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষকদের ভাইরাসটির জেনেটিক পরিবর্তনগুলো শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।’
ড. আক্তারুজ্জামান যোগ করেন, ‘বেশ কয়েকজন রোগীর কাছ থেকে সংগৃহীত ভাইরাল জিনোমের জিনগত অনুক্রমের পরিবর্তনগুলো দেশে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে এ রোগের বিস্তারকে পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে।’
তিনি লিখেন, এ মুহূর্তে ভাইরাল জিনোম সিকোয়েন্স থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো আমাদের দেশে প্রচলিত নির্দিষ্ট ভাইরাল স্ট্রেনগুলো শনাক্ত করা, সংক্রমণের হটস্পট বা সুপার-স্প্রেডার শনাক্ত করা এবং জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য কৌশল প্রণয়ন করা।
‘এটি আমাদের নিজস্ব জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব দিনের পর দিন প্রকট হচ্ছে। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল ধরনের অপ্রয়োজনীয় পরিষেবা ও পরিবহন সেবা বন্ধ করে দেওয়া হলেও করোনা পরিস্থিতি দিনের পর দিন সংকটময় হচ্ছে।
বুধবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যুসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৯ জনে। আরও নতুন করে রেকর্ডসংখ্যক ১১৬২ জন আক্রান্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৭ হাজার ৮২২ জন।