নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার, নিজেই হলেন নির্যাতক!
প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২০, ২৩:১২ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০, ২৩:১৬
রাজধানীর উত্তরায় এক গৃহপরিচারিকাকে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থপতি সাঈদা সুলতানা অ্যানী'র বিরুদ্ধে। ১৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মারধর এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ছবি-ভিডিও পোস্ট করেছেন নির্যাতনের শিকার ঐ গৃহপরিচারিকা পাপিয়া আক্তার মীম।
পাপিয়া আক্তার মীম এর পোস্ট করা ভিডিওতে শোনা যায়, নির্যাতনের শিকার মীম আকুতি জানাচ্ছে বারবার, 'আপনি গেটটা খুলে দেন। আমি চলে যাব'। কিন্তু তাতেও যিনি নির্যাতন করছিলেন তিনি দমে যাননি। বরং নির্যাতক নারী অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও চড়াও হতে থাকেন ওই গৃহপরিচারিকার ওপর। বার বার অনুরোধ করা সত্বেও নিপীড়ন বন্ধ হয়নি মীমের উপর। ভিডিও শেষে দেখা যায়, কান্নারত কন্ঠে মোবাইলটি সাঈদা সুলতানা অ্যানী'র দিকে তাক করে মীম বলেন, "আপনারা সবাই দেখুন, এই সেই মহিলা যিনি আমাকে নির্যাতন করেছেন।"
ফেসবুকে কয়েকটি ভিডিও ও নিজের শরীরের আঘাতের ছবি পোস্ট করে পাপিয়া আক্তার মীম লিখেছেন, ‘এই করোনার মহামারিতে মানুষ এমন হিংস্র কিভাবে হতে পারে,সবাইকে আমার এই ভিডিও টা দেখার জন্য অনুরোধ করছি। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছোট একটা জবে ঢুকেছিলাম,এর মধ্যে করোনার জন্য চাকরি শেষ পর্যন্ত করতে পারি নাই। ভাবলাম, বসে থেকে কি হবে,এক পরিচিত ভাই ভাইয়ের মাধ্যমে এক বড়লোকের বাড়িতে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে দেখাশোনা করার জন্য কাল যাই। সমান্য একটা ভুলের কারনে, যেই ভুলটা আমি করি নাই, ফ্রিজ পরিস্কার করা নিয়ে একটু দাগ হওয়ার কারনে, কাল থেকে আজ সকাল পযন্ত আমাকে আটকে রেখে এমন নির্যাতন করে। আমি বার বার বলছি, ম্যাম আমাকে যেতে দেন,উনি পরে আমার একটা ভিডিও ধারন করে,যেখানে আমাকে জোরপূর্বক বলতে বলে যে আমি উনার বাসা থেকে ইচ্ছাকৃত চলে যাচ্ছি। আমি মারের ভয়ে বলতে বাধ্য হয়েছি,তার পর আমি থানায় যাই কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পুলিশ আমার সাথে আসছে ঠিক কিন্তু, উনার সাথে ফোন কথা বলে,আমাকে বলছে আপনি বাসাই যান, আমরা দেখছি ব্যাপারটা। জানি আমি এটার আর কিছু হবে না,তাই আপনাদের সাথে কথাটা শেয়ার করলাম।’
তিনি আরও লেখেন, ‘পরিস্থিতি মানুষকে অসহায় করে ফেলে, যখন মা বাবা মুখের দিকে তাকাই তখন আর কোন কিছু মাথাই আসে না,’
এ বিষয়ে অবশ্য অভিযুক্ত অ্যানী এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানান, কাজ করার দ্বিতীয় দিনেই মীম ১০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। এছাড়া মীমকে নির্যাতন করার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত স্থপতি সাঈদা সুলতানা অ্যানী শাহবাগ গণজাগরণমঞ্চসহ বিভিন্ন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় সাঈদা সুলতানা অ্যানীর সাথে আন্দোলনে যুক্ত অনেকেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।