ফেনীতে ফেসবুক লাইভে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২০, ১৮:২৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী ওবায়দুল হক টুটুলকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ।

১৫ এপ্রিল (বুধবার) দুপুরে সোয়া ১টার দিকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বারাহীপুর ভূইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

টুটুল ভুইয়া নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে এমন নৃশংস খুনের অবতারণা করেন ওই যুবক।

আজ বিকালে ফেনী মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও মামলা হয়নি।’

জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারী এক সন্তানের মা ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতি ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তার। এবং খুনি টুটুল ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াঈপুর এলাকার গোলাম মাওলা ভূইয়ার ছেলে।

এদিকে নিহতের বোন রেহানা আক্তার জানান, ‘৫ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গুনবতী এলাকার আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে ওবায়দুল হক টুটুলের প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আর্থিক অসচ্ছলতা নিয়ে তাদের প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এরইমধ্যে টুটুল স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নেন। কিন্তু আরও টাকার জন্য চাপ দিলে তাহমিনা অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে আজ বুধবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী টুটুল তার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।’

তবে হত্যার আগে ফেসবুক লাইভে টুটুল ভুইয়া বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আমাকে ক্ষমা করে দেবেন, আজকে আমার কারণে আমার পরিবার ধ্বংস। যার কারণে ধ্বংস আজকে তারে আমি এ মুহূর্তে ধ্বংস করে দিলাম। আমি চেষ্টা করছি, অনেক চেষ্টা করছি, পারি নাই।’

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে সবাই আমাকে মাফ করে দেবেন। আমার এতিম মেয়েটার খেয়াল রাখবেন। আমার ভাইবোনগুলোর খেয়াল রাখিয়েন। আমার পরিবার ভাইবোনগুলার কোনো দোষ নাই। কেউ এটাতে সম্পৃক্ত না। আমি আমার আজকের এ ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্লিজ সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ আমার ভিডিওটা ভাইরাল করেন। যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়। আর এ ঘটনার জন্য আমিই একমাত্র দায়ী। কেউ না।’

এরপর দা হাতে নিয়ে ছুটে যান টুটুল। এক কোপ, দুই কোপ, তিন কোপ এভাবে ৯টি কোপ দেন স্ত্রীকে। এরপর তার স্ত্রী লুটিয়ে পড়েন মাটিতে।

পুলিশ জানায়, হত্যার পর টুটুল নিজেই পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে এবং হত্যাকাজে ব্যবহৃত দা ও মোবাইল জব্দ করে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দম্পতির দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত