কিশোরগঞ্জে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:২৮
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় স্কুলছাত্রী স্মৃতি আক্তারকে (১৫) গণধর্ষণ ও হত্যার দেড় মাস পর এই মামলার প্রধান আসামি জাহিদ মিয়াকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বিকেলে পাকুন্দিয়া থানার পুলিশ কিশোরগঞ্জ শহর থেকে জাহিদকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার জাহিদ পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে এবং স্কুলছাত্রী স্মৃতি গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। এর আগে গত ২১ জুলাই এই মামলার ২ নম্বর আসামি পিয়াস মিয়াকে (১৮) চট্টগ্রামের পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পিয়াস এখন কারাগারে আছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নিহত স্মৃতি হোসেনপুর উপজেলার জামাইল গ্রামের আবু হোসেনের মেয়ে এবং হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আসামি জাহিদের বাড়ি স্মৃতির নানাবাড়ি পাকুন্দিয়ার গাংধোয়ারচর গ্রামের পাশের গ্রামে হওয়ায় এই সূত্রে স্মৃতির সাথে তার পরিচয় হয়। গত ১৬ জুলাই স্মৃতিকে নিয়ে তার মা আঙ্গুরা খাতুন বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে খবর পেয়ে ১৭ জুলাই রাত নয়টার দিকে আসামি জাহিদ পাঁচ-ছয়জনকে সঙ্গে নিয়ে স্মৃতিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এ সময় স্মৃতির মা আসামিদের বুঝিয়ে বলেন, এখনো স্মৃতির বিয়ের বয়স হয়নি। তার লেখাপড়া শেষ হলে তারপর বিয়ে দেবেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা মা-মেয়েকে হত্যার হুমকি দেন।
সে রাতে স্মৃতি ও তার মা খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ার পর রাতের কোনো একসময় টয়লেটে যাওয়ার জন্য স্মৃতি ঘরের বাইরে যায়। কিন্তু অনেকক্ষণ পরও সে ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে বাড়ির পেছনে পুকুরপাড়ে যান মা আঙ্গুরা খাতুন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, জাহিদসহ পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক তার মেয়েকে ঘিরে রেখেছেন। একপর্যায়ে স্মৃতিকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরদিন ভোরবেলায় পুকুরপাড়ে বরইগাছে স্মৃতির লাশ ঝুলতে দেখা যায়। এসময় লাশের হাঁটু মাটিতে লেগেছিল এবং তার ডান হাত ও বাঁ পা ভাঙা ছিল। এছাড়া তার শরীরের নিচের অংশ রক্তাক্ত ছিল।
গত ২০ জুলাই স্মৃতির মা বাদী হয়ে জাহিদ, পিয়াস, রুমান, রাজুসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, রবিবার রাতে থানা-হেফাজতে রেখে জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সোমবার তাকে কিশোরগঞ্জ আদালতে তুলে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।