সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০১৯, ১৪:১৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

সিটি ব্যাংকের এমডিসহ (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) তিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন ব্যাংকটির সাবেক এক সিনিয়র নারী কর্মকর্তা। মামলায় আসামি করা হয়েছে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন, হেড অব সিএসআরএম আবদুল ওয়াদুদ ও বোর্ড সেক্রেটারি কাফি খানকে। 

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে গুলশান থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) এসএম কামরুজ্জামান জানান,  ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ব্যাংকে যোগদান করার পরপরই মাসরুর আরেফিনের নিয়মিত ইভটিজিংয়ের শিকার হন তিনি। বিভিন্ন সময় গাড়িতে লিফট দেয়ার নাম করে তার ওপর অতর্কিত আক্রমণ, লিফটের ভেতরে, সিঁড়িতে অফিস চলাকালীন তার হয়রানির শিকার হতে হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় এমডির এসব আচরণ সহ্য করেই তাকে কাজ করতে হয়। এ তিন কর্মকর্তার কুরুচিপূর্ণ আচরণের বিষয়টি বহু আগেই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে জানানো হলেও তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে বাদী অভিযোগ করেন। এ ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একই ফ্লোরে কাজের পরিবেশ নেই জানানোর পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মনিরা সুলতানাকে ট্রান্সফার করা হয়। এরপর ৩১ ডিসেম্বর ডিএমডি (অপারেশন) মাহিয়া জুনেদ এবং মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান তাকে চাকরি খুঁজতে বলেন।

বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিতে গত ১০ জুলাই থানায় জিডি করেন। তবে অভিযুক্তরা সেখানেও পুলিশকে ম্যানেজ করে ফেলে। মামলা করতে গেলেও পুলিশ সারাদিন থানায় বসিয়ে রেখেও মামলা নেয়নি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করি। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে পুলিশ গত ১৮ আগস্ট (রবিবার) মামলা নিতে বাধ্য হয়।

মামলাটি করা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪০৬/৫০৬ ধারায়। যেখানে শ্লীলতাহানি ও শ্লীলতাহানিতে সহায়তা প্রদান করা এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও হুমকি প্রদর্শনের অপরাধের কথা বলা আছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার বাদী বলেন, তাদের কথা অনুযায়ী না চলা এবং নোংরা আবেদনে সাড়া না দেয়া ও দুর্নীতিগ্রস্ত ঋণ প্রদান প্রক্রিয়ায় জড়িত না থাকায়  সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কর্পোরেট জগতের ১৭ বছরের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। এমনকি শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন তার কাছে ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুতির চিঠি পাঠানো হয়। 

এদিকে মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন ও মামলার অপর আসামি আবদুল ওয়াদুদ সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানান। উচ্চ আদালত থেকে তারা ইতিমধ্যে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছেন বলেও জানান। তবে বোর্ড সেক্রেটারি কাফি খানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত