ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যপ্রদান

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০১৯, ১৮:৩৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী সাক্ষ্য দিয়েছেন। ৩১ জুলাই (বুধবার) মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে জবান্দবন্দি দেন। 

এর আগে আসামি মোয়াজ্জেমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ ফারুক আহম্মেদ সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখার অনুরোধ করলেও উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ২০ আগস্ট জেরার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌন নিপীড়নের মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে গত ১০ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর গত ৮ মে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার পর রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন।

যৌন নিপীড়নের শিকার নুসরাত থানায় যে অভিযোগ করে তা সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ভিডিও রেকর্ডিং করে এবং পরে তা ছড়িয়ে দেয়। গত ১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন আদালতে মামলাটি করেন।

এ মামলায় গত ২৭ মে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেমকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত