‘মিন্নির প্রতি অতি উৎসাহী না হয়ে মূল আসামিদের দিকে নজর দিন’
প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০১৯, ১১:৪২
বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির প্রতি অতি উৎসাহী না হয়ে পুলিশের উচিত মূল আসামিদের দিকে নজর দেয়া- এমন মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।
গত ২৮ জুলাই (রবিবার) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রিফাত শরীফ হত্যা মামলাটির তদন্ত পিবিআই বা সিআইডিতে হস্তান্তরের নির্দেশনা চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন।
শুনানিতে হাই কোর্ট বলে, এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মাদকের ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এরপরেও তারা পুলিশের নজরদারির মধ্যে কীভাবে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। পুলিশ সতর্ক থাকলে হয়তো রিফাতকে এভাবে প্রাণ দিতে হতো না। তাই মিন্নির প্রতি উৎসাহী না হয়ে মামলার মূল আসামিদের দিকে পুলিশের নজর দেওয়া উচিত। পরে আবেদনকারী যথাযথ ব্যক্তি নয় উল্লেখ করে আবেদনটি উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে হাই কোর্ট। আদালত বলেছে, এ ধরনের আবেদন মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ করতে পারেন।
শুনানিতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার উপস্থিত ছিলেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, আদালত তদন্তে কোন হস্তক্ষেপ করতে চায় না। আর যিনি আবেদন করেছেন, তিনি এই আবেদন করতে পারেন না। তবে বিচারকাজ সুষ্ঠু হচ্ছে না অভিযোগ এনে মিন্নির পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। পরে আবেদনটি উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশলাইনসে নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পর দিন মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী।
গত ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। আগামী ৩০ জুলাই তার জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা।