‘বাংলাদেশের সকল বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগান’

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০১৯, ০৯:৪০

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলাদেশের ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের সকল সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করে তা কাজে লাগানোর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্থানীয় সময় ০৪ জুলাই (বুধবার) চায়না কাউন্সিল ফর দি প্রোমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি)-এ চীনা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে তার মূল প্রবন্ধে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তাই আমি আপনাদের বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এবং বাণিজ্য সম্পর্কের সকল সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করে কাজে লাগানোর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশের রপ্তানী খাত দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী বছরগুলোতে চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে আমদানী উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করবেন।

তিনি বলেন, ‘এখন এমন অনেক ক্ষেত্রই রয়েছে যেখানে আপনাদের বিনিয়োগ সম্প্রসারিত করতে পারেন। বিশেষকরে উৎপাদন খাতে-যেমন বস্ত্র ও চামড়া এবং মাঝারি ও ভারি শিল্প খাত যেমন কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং হাল্কা প্রকৌশল খাতে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ১৬ কোটির অধিক জনসংখ্যার বিশাল বাজারে কেবল সরাসরি প্রবেশাধিকারই নিশ্চিত করবে না বরং পরোক্ষভাবে চীন তথা দক্ষিণ এশিয়ার ৩শ’ কোটির অধিক জনসংখ্যার বাজারেও প্রবেশাধিকার প্রদান করবে।’ এই প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন,২০২৭ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন বড় বাজারগুলোতে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে যদিও দেশটি একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নানারকম প্রতিযোগিতামূলক এবং আকর্ষণীয় আর্থিক প্রণোদনার প্যাকেজও প্রদান করে থাকে।
যারমধ্যে রয়েছে- যখন ইচ্ছে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার সময় মুনাফা এবং আসল নিয়ে যাওয়ার সুযোগ, আয়কর রেয়াত, নির্ধারিত পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে আর্থিক প্রণোদনা,৭৫ হাজার ডলার বিনিযোগের ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ এবং ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বও প্রদান করে থাকে।

তিনি বলেন, তৈরী পোষাক এবং বস্ত্র খাতে চীনের পর পরই বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানীকারক দেশ এবং এই তৈরী পোষাক খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের উচ্চমান এবং দামের সুবিধার জন্য এটি ইতোমধ্যেই বিশ্বের মোট রপ্তানীর ২ থেকে ৩ ভাগ দখলে সমর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বৃহৎ অর্থনীতির দেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশেই তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সেবা সমূহ রপ্তানী করছি। দেশের প্রথাগত জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প কারখানাগুলোকে জাহাজ নির্মাণ শিল্প কারখানায় রুপান্তর করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘বাংলাদেশ এখন উন্নত অনেক দেশেই ছোট এবং মাঝারি আকারের জাহাজ রপ্তানী করছে।’

গোলটেবিল বৈঠকে চীনা ইন্টারনেশনাল কন্ট্রাকটরস এসোসিয়েশনের (সিএইচআইএনকেএ) চেয়ারম্যান ফ্যান্ক কুইচেন, চীনা স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের (সিএসসিইসি) ঝুউ ইয়ং, হাওয়াই টেকনোলজির নির্বাহী ভাইচ প্রেসিডেন্ট জেঙ্গ চেঙ্গগেঙ্গ, হায়ার ইলেকিট্রকেল এপ্লিয়ান্স’র ভাইচ প্রেসিডেন্ট ডিয়াও ইয়ুনফেঙ্গ, চীনা রেলওয়েস ইন্টারনেশনাল গ্রুপ কোম্পানীর চেয়ারম্যান জিএএন বেইশিয়ান ও ওভারসীস অপারেশনস অব চীনা রেলওয়ে কন্সট্রাকশন গ্রুপের প্রেসিডেন্ট কেও বাওগেঙ্গ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও, বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ফজলে ফাহিম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মুনতাকিম আশরাফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান ও ইন্টারনেশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আফজল রহমান।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত