যৌন নিপীড়নের মামলায় সেই মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০১৯, ১০:২৫
যৌন নিপীড়নের যে মামলার কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয় ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে, সে মামলায় ঐ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
০৩ জুলাই (বুধবার) জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসেনের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম।
পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, “যৌন হয়রানির মামলায় ২৭১ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার সময় মোবাইল ফোনে ধারণকৃত অডিও-ভিডিও রেকর্ডের দুটি কপি।”
এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকসহ ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, মামলাটির শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। পরে নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার আলীম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির মা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় যৌন হয়রানির মামলা করেন। পরিবারের অভিযোগ, যৌন হয়রানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে অধ্যক্ষের হুকুমে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, সেই সময় ঐ মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। তারপর গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।