বরগুনা হত্যাকাণ্ড: মূল আসামি নয়ন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে তার স্বামী রিফাত শরিফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড আইন-শৃঙ্খলা-বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

০২ জুলাই (মঙ্গলবার) ভোর ৪টার দিকে এ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।

বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন জানান, ভোর রাত ৪টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বরগুনা সদর থানার পুলিশের একটি দল  নয়ন বন্ডকে গ্রেপ্তারের জন্য  পূর্ব বুড়িরচর গ্রামে যায়। ওই গ্রামের খলিল মাস্টারের বাড়ির সামনে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলে নয়ন নিহত হন। হামলায় বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান মিয়াসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি চাপাতি, একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

নয়ন বন্ডের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে গত ২৬ জুন (বুধবার) সকালে রিফাত শরিফকে কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। এসময় তার স্ত্রী বাধা দিয়েও তাদের আটকাতে পারেননি। নিহত রিফাত শরিফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হালিম দুলাল শরিফ।

এঘটনায় বুধবার রাতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সন্ত্রাসী দুই যুবক ধারালো দা দিয়ে একের পর এক কোপাতে থাকে রিফাতকে। এ সময় শরিফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই সন্ত্রাসীকে বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভয়াবহ এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিক্রিয়া দিয়ে যাচ্ছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। তারা এ ঘটনার নিন্দাসহ দোষীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করেন।

হামলার পর রিফাতকে গুরুতর আহতবস্থায় প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে আশঙ্কাকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভর্তির এক ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শরিফের মৃত্যু হয়।

২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে রিফাতকে দাফন করা হয়।