নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে গেলো নুসরাত হত্যা মামলা
প্রকাশ | ৩০ মে ২০১৯, ১৬:১৭ | আপডেট: ৩১ মে ২০১৯, ১০:৫২
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়েছে। ৩০ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ফেনীর আমলি আদালতের বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। আগামী ১০ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ সময় মামলার বাদী নুসরাতের ভাই আবদুল্লাহ আল নোমান এবং মামলাটির চার্জশিটভুক্ত ১৬ জনসহ গ্রেপ্তার ২১ আসামির সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী জানান, আগামী ১০ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে।
এদিকে এ মামলার শুরুতে একজন আইনজীবী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার পক্ষে দাঁড়ানোয় আওয়ামী লীগ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর এই মামলার আসামির পক্ষে না দাঁড়ানোর জন্য ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সব আইনজীবীকে অনুরোধ জানানো হয়। এর ফলে, গত দুই মাসে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়ায়নি। বৃহস্পতিবার প্রথম একজন আইনজীবী আদালতে একজন আসামির পক্ষে দাঁড়ান এবং তার জামিনের আবেদন জানান। কিন্তু আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পরবর্তী ধার্য তারিখে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার পরামর্শ দেন।
এর আগে ২৯ মে (বুধবার) এই মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও ফেনী আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম এই ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জন আসামির মধ্যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌন নিপীড়নের মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।