সিসিটিভিতে সেই শিশুটিকে ফেলে যাওয়ার দৃশ্য

প্রকাশ : ১৬ মে ২০১৯, ১৭:০১

জাগরণীয়া ডেস্ক

ঢাকা শিশু হাসপাতালের টয়লেট থেকে উদ্ধার হওয়া কন্যাশিশুটিকে দুই নারী এসে ফেলে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৪ মে (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টার দিকে বোরকা পরিহিত দুই নারী খুব দ্রুতবেগে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ঢুকছেন। এদের মধ্যে এক নারী কাপড়ের পুটুলি সদৃশ কিছু সাথে নিয়ে শৌচাগারে ঢুকে বেরিয়ে যান। ঢোকার সময় হাতে যে পুটুলি দেখা যাচ্ছিল ছিল, সেটি বের হবার সময় ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে এই দুজনই ফেলে যায় শিশুটিকে।

শিশুটির শারিরীক অবস্থা প্রসঙ্গে ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘শিশুটি দুধ খাচ্ছে, প্রস্রাব-পায়খানা করছে। কোনো ধরনের ইনফেকশনের প্রমাণ মেলেনি। বাচ্চাটা খুবই ভালো আছে। অবৈধ সন্তান মনে করে সাধারণত জন্মের পর পরই শিশুদের ফেলা যাওয়ার রেকর্ড বেশি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মেয়ে শিশুটির বয়স কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাত দিন। সেটি একটি রহস্য মনে হচ্ছে।’

শিশু হাসপাতালের অপর সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আবু তায়েব বলেন, ‘এমনও হতে পারে, মা জানে না। অন্যজন এনে ফেলে দিয়েছে, এমনটাও তো হতে পারে। দুইটাই হতে পারে।’

এর আগে এ বিষয়ে শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম বলেন, টয়লেটে ওই নবজাতককে দেখে কর্তৃপক্ষকে জানান এক রোগীর স্বজন। এরপরই হাসপাতাল জুড়ে শিশুটিকে নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। চিকিৎসকরা দায়িত্ব নিয়ে ব্যবস্থা করেন চিকিৎসার।

তিনি আরও বলেন, শিশুটির অভিভাবককে খুঁজতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। হাসপাতাল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে শিশুটিকে কে বা কারা ফেলে গেছেন সেই রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

পুলিশের তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহমুদ হাসান বলেন, ফুটফুটে ঐ শিশুর মা-বাবাকে খুঁজতে ডিসি-তেজগাঁও-ডিএমপি ফেসবুক পেজে ছবিসহ একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এরপর থেকে অনেক ফোন আসছে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য। অনেকে ফেসবুক পোস্টের নিচেই তাদের দত্তক নেয়ার জন্য নাম-ঠিকানা ও সিরিয়াল দিয়ে রাখছেন। অভিভাবক খুঁজে পাওয়া না গেলে পরবর্তীতে শিশু আইনে আদালত যা সিদ্ধান্ত দেবে পুলিশ সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করবে।

এদিকে, ঢাকা শিশু হাসপাতালের ৩০১ নম্বর কেবিনে যেন আকাশ থেকে এক ফালি চাঁদ নেমে এসেছে। এমন চাঁদের টুকরোকে দেখার জন্য এখন অসংখ্য মানুষ ভিড় করছে শিশু হাসপাতালে, অনেকেই আবার চাইছেন শিশুটির দায়িত্ব নিতে। অথচ তখনো শিশুটি উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টা পার হয়নি। মানুষের ভিড়ে শিশুটির নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। শিশুটির কেবিনের বাইরে তাই মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত