নুসরাত হত্যা: সিঁড়ি পাহারায় ছিলেন শাকিল
প্রকাশ | ০৮ মে ২০১৯, ১১:৫৮
যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুন দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনার দিন সিড়ি পাহারার দায়িত্বে ছিলেন আসামি মহিউদ্দিন শাকিল।
৭ মে (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে আসামি মহিউদ্দিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এ সময় তিনি বলেন, ঘটনার দিন সে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে সাইক্লোন শেল্টারের সিঁড়ি পাহারার দায়িত্বে ছিল যাতে কেউ ছাদে উঠতে এবং হত্যার ব্যাপারে বাধা দিতে না পারে। এছাড়া নুসরাতকে হত্যা চেষ্টার জন্য যাবতীয় সকল পরিকল্পনার বিষয়ে সে অবগত ছিলো।
উল্লেখ্য, এ মামলার অপর দুই আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম ও নুর উদ্দিনের স্বীকারোত্তিমূলক জবানবন্দিতে শাকিলের নাম উঠে আসলে গত ২৫ এপ্রিল ফেনী শহরের উকিলপাড়া এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়। শাকিল সোনাগাজীর চর চান্দিয়া গ্রামের রহুল আমীনের ছেলে। সে নুসরাত জাহান রাফির সহপাঠী ছিল। গত ০২ মেমামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম আসামি শাকিলকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করে ০৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত ০৫ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৬ এপ্রিলমাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় পাঁচজন মিলে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌন নিপীড়নের মামলায় কারাগারে গেলেও জেলে বসেই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
এরা হলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও মো. ইমরান হোসেন।