অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ, কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ২২:৩১
অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে ঘরের চালায় ছোঁড়া হয় ঢিল, জুটে আরও নানা অপবাদ। এসব অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন তানিয়া বেগম (২৪) নামের এক কলেজছাত্রী। ২৭ এপ্রিল (শনিবার) সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
তানিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, তানিয়া সরকারি জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি পৌর স্টেডিয়াম সংলগ্ন সাজেদা আলম নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন তিনি। সেখানে তার সহকর্মী উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে তানিয়ার বাড়িতে এসে মিজানুর দেখা করেন। এসময় গ্রামের কিছু মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে মিজানুরকে আটকে রাখেন এবং তানিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে বিয়ে করতে চাপ দেন। কিন্তু মিজানুর তাতে রাজি না হওয়ায় সেদিন রাত থেকেই তানিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর সামাজিক অত্যাচার শুরু হয়। সারারাত তাদের বাড়ির চালায় ঢিল ছোঁড়া হয়। এরপর সকালে এসে গ্রামবাসী নানা অপবাদ দেয় তানিয়াকে। এর মধ্যে কেউ কেউ তানিয়াকে বিষপান করে বা গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তানিয়া।
এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রবিবার তানিয়ার বাবা মিলন মীর তানিয়ার প্রেমিক মিজানুর রহমান ও মিজানুরের মা হেলেনা বেগম, বোন রূপালী বেগম সহ আটজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। অন্য অভিযুক্তরা হলেন প্রতিবেশী শাহ আলম, নুর আলম সরকার, ফিরোজ, চায়না বেগম ও ফরিদা বেগম। মামলার পর রবিবার দুপুরে পুলিশ মধ্যেরচর গ্রাম থেকে জিহাদ মিয়া ও সানোয়ার মিয়া নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করলেও এজাহারভুক্ত কাউকে ধরতে পারেনি।
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাহালুল আলম খান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জিহাদ ও সানোয়ারকে আটক করা হয়েছে।
তবে আটক হওয়া জিহাদ ও সানোয়ার দাবি করেছেন এই ঘটনার সাথে তারা জড়িত নন।