জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৪৪
ব্রুনেই সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তিনি শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলার নিন্দা জানিয়ে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শুরুতেই শ্রীলঙ্কার ভয়াবহ বোমা হামলার প্রসঙ্গে টেনে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে শোকবার্তা পাঠাই। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এ হামলায় আমিও আমার এক আপনজনকে হারিয়েছি। আমার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম এমপি-এর নাতি আট বছরের নিষ্পাপ শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হয়েছে। জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও শ্রীলঙ্কায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি এই হামলার আহতদের দ্রুত আরোগ্য ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
সম্প্রতি তিনদিনের ব্রুনেই সফরে ব্রুনেই-এর সুলতানের আতিথেয়তা ও সম্মানকে খুবই বিরল বলে আখ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ সফরের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আমি দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ে সফর বিনিময়, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, খাদ্য, কৃষি, মৎস্য, জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিমান যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করি এবং দু’দেশেই এগুলো বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্রুনেই-এর সুলতান বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সুলতান শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এছাড়াও দেশটির সুলতান ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া ও তাদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সুলতান রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায়ভিত্তিক ও স্থায়ী সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ব্রুনেই এর সুলতানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, এ সফরে ব্রুনেই সুলতান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কৃষি, সংস্কৃতি ও শিল্প, যুব ও ক্রীড়া, মৎস্য, পশু সম্পদ, জ্বালানি খাতে ৬টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে ব্রুনেই-বাংলাদেশ। এছাড়া দুই দেশের কুটনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসা ছাড়া ভ্রমণ বিষয়ে একটি কূটনৈতিক নোট বিনিময় হয়েছে।