নুসরাত হত্যা: পুলিশের ব্যর্থতায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:৪৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীতে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। 

গত ২১ এপ্রিল (রবিবার) কমিটির বৈঠকে সদস্যরা বর্বর ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তারা।

বৈঠকে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বলেন, ‘বৈঠকে আমি বলেছি, পুলিশ সতর্ক থাকলে অনেক ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা নেয়া যায়। যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে নুসরাত যখন ওসির কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিল, তখন তিনি (ওসি) যদি গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করতেন তা হলে হয়তো নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটত না।’

জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু। বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, ফরিদুল হক খান, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল পাঁচজন মিলে ৫ মিনিটের মধ্যেই ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় যার ফলশ্রুতিতে ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।

এরা হলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও মো. ইমরান হোসেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত