নুসরাত হত্যা: মনি ও জাবেদের স্বীকারোক্তি
প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১২:১১
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আরও দুই আসামি কামরুন নাহার মনি ও জাবেদ হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
২০ এপ্রিল (শনিবার) রাতে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে বিকাল ৫টায় কামরুন নাহার মনি ও জাবেদ হোসেনকে আদালতে আনা হয়। সন্ধ্যার আগে শুরু করে কয়েকঘণ্টা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
পরে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় বোরকা পরা পাঁচজনের মধ্যে কামরুন নাহার মনি ও জাবেদ হোসেন ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত এই দুজন আদালতকে জানান, “নুসরাতকে ছাদে শুইয়ে গলা চেপে ধরে মণি। আর আসামি জাবেদ সে সময় নুসরাতের গায়ে এক লিটার কেরোসিন ঢেলে দেয় এবং ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
এ নিয়ে আলোচিত এ মামলায় নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে সাতজন জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে স্বীকারোক্তি দেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও উম্মে সুলতানা পপি।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল পাঁচজন মিলে ৫ মিনিটের মধ্যেই ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় যার ফলশ্রুতিতে ১০ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক নুসরাত। শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা থাকলেও মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় শেষ মুহুর্তে তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি এবং আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
এরা হলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও মো. ইমরান হোসেন।