শারিরীক অবস্থার কারণে সিঙ্গাপুরে নেয়া হচ্ছে না সেই ছাত্রীকে

প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৪৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীতে অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীর শারিরীক অবস্থা প্লেন যাত্রার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। 

 ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকালে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সকাল ৯টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা দগ্ধ ছাত্রীর শারিরীক অবস্থা নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানালেন- দীর্ঘ পাঁচঘণ্টার প্লেনযাত্রা তার জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এজন্য এখন তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো ঠিক হবে না। তবে শারীরিক পরিস্থিতি একটু স্ট্যাবল হলে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সিঙ্গাপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ওই ছাত্রীর জন্য নতুন কিছু চিকিৎসা সাজেশন দিয়েছেন। আমরা সেই সাজেশনগুলো তার চিকিৎসা ব্যবস্থায় যোগ করবো। সিঙ্গাপুরের সাথে চিকিৎসার জন্য আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলবো।

উল্লেখ্য গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে পৌরশহরের সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে এসে অগ্নিদগ্ধ হন ঐ ছাত্রী।

ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন অভিযোগে গত ২৭ মার্চ একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় এখনো কারাগারে আছেন ঐ অধ্যক্ষ। ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে ও অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের দু'টি অংশ আলাদা আলাদাভাবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।

বোনের বরাত দিয়ে নোমান বলেন, রাফি এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছেন। শনিবার সকালে রাফির আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা থাকায় বোনকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নিয়ে যান তিনি। সেসময় কয়েকজন ছাত্র ও অফিস সহকারী মো. মোস্তফা তাকে মাদ্রাসায় ঢুকতে বাধা দিলে তিনি বোনকে কেন্দ্রে দিয়ে চলে যান। পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। কিন্তু রাফি এ ব্যাপারে সম্মতি না দেয়ায় তিনজন শিক্ষার্থী মিলে তার হাত ধরে রেখে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় তার চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ছুটে এসে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার অবস্থা বিবেচনায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান। ওই ছাত্রী এখন ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ৭ এপ্রিল (রবিবার) রাতে মেয়েটি তাকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত একজনের নাম বলেছেন। দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে চিকিৎসকের কাছে দেওয়া বক্তব্যে ছাত্রীটি বলেন, এ ঘটনায় চারজন অংশ নেন। এঁদের অন্তত দুজন নারী, একজনের নাম ‘শম্পা’। নেকাব, বোরকা, হাতমোজা পরা ছিল হামলাকারীদের।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত