তনু হত্যার তিন বছর, নেই কোন অগ্রগতি
প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৭
কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকার পাওয়ার হাউসের অদূরে ঝোপ থেকে কলেজছাত্রী তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিন বছরেও এই মামলার তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
তিন বছরেও তনু হত্যা মামলার আসামি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এদিকে মামলার তদন্ত নিয়েও রয়েছে অনেকের অনেক অভিযোগ। দুই দফা ময়নাতদন্ত, মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও এ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি তনু হত্যা মামলা। বিভিন্ন সময়ে সামরিক-বেসামরিক ৭০ জনের অধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা, দুই দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ অস্পষ্ট থাকা, এমনকি ডিএনএ পরীক্ষায় ৩ ধর্ষণকারীর শুক্রাণু পেলেও এ পর্যন্ত ডিএনএ ম্যাচ করে ঘাতকদের শনাক্ত করতে না পারায় এ মামলার ভবিষ্যৎ কিংবা বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর পরিবার, মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল সংশয় প্রকাশ করেছে।
তনুর পরিবারের অভিযোগ, তনু হত্যা মামলার তদন্তকাজ এক বছর ধরে স্থবির হয়ে আছে। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাদের সঙ্গে মামলার বিষয়ে যোগাযোগ করছে না।
তবে তনুর পরিবারের এই অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, তদন্ত আরও সতর্কভাবে চলছে। ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ম্যাচিং করার জন্য কাজ চলছে।
এদিকে তনু হত্যার ৩ বছর পূর্তিতে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের উদ্যোগে শোকর্যালি, বাদ জোহর মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার মহড়াকক্ষে মিলাদ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। অন্যদিকে বিকেল চারটায় কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চ ও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর সেই বছর ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।