আমার স্বামী নির্দোষ: হাসনাতের স্ত্রী
প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০১৬, ১৮:০৫
গুলশানের হলি আর্টিসানের হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে আটদিনের রিমান্ডে নেয়ার পর এই ঘটনায় তাকে নির্দোষ দাবী করে একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন হাসনাত করিম এর স্ত্রী শারমিন করিম।
লিখিত বক্তব্যে শারমিন বলেন, "আমার স্বামী নির্দোষ এবং ওই রাতে জঙ্গি হামলায় অন্যান্য জিম্মিদের মতোই তিনি ভিকটিম ছিলেন। আমরা সে রাতে ওই রেস্তোরাঁয় উপস্থিত থাকার একমাত্র কারণ, আমার মেয়ের ১৩তম জন্মদিন উদযাপন। সন্তানেরা হাসনাতের জীবন, তিনি কখনোই আমাদের কোনও ক্ষতির মধ্যে ফেলতে পারেন না"।
তিনি বলেন, "আমরা হাসনাতের পরিবার, এ বিষয়টি বুঝতে পেরে হামলাকারীরা সেটার সুবিধা নিতে চেয়েছিল। তারা জানতো, তিনি কখনোই আমাদের ছেড়ে যাবেন না। সে কারণেই তারা সে রাতে অনেক কিছু করতে তাকেই বেছে নেয় এবং তাকে সেদিন মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছিল"।
লিখিত বক্তব্যে সে রাতে নিজেদের অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে শারমিন করিম বলেন, "সারারাত আমাদের বন্দুকের সামনে রেখেছিল এবং আমার স্বামী হামলাকারীদের নির্দেশ মানতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাদের নির্দেশ মতো কাজ না করলে আমাদের মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তারা তার (হাসনাতের) কাছ থেকে আইডি এবং মোবাইল ফোন নিয়ে তারপর ইন্টারনেট ব্যবহার করেছিল"
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে হাসনাতের চাকরি যাওয়া প্রসঙ্গে শারমিন করিম বলেন, "যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। ২০১৩ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বাবার ব্যবসায় সহায়তা করতে তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন"। এনএসইউ তাকে ছাড়পত্রও দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি একটি দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের লিংক বক্তব্যের সঙ্গে জুড়ে দেন।
তিনি বলেন, "আমরা শুরু থেকে পুলিশকে তাদের তদন্তে সহায়তা করেছি এবং করছি, যাতে তিনি (হাসনাত) দ্রুত মুক্ত হন। আমরা সবাই ভীষণ ক্লান্ত এবং তাকে নিয়ে চিন্তিত। তিনি ফিরে আসুক এটুকুই চাই। আমরা এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত যে, তদন্তের মাধ্যমে নিষ্কৃতি দেওয়া হবে। কারণ, তিনি নির্দোষ"।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই শুক্রবার রাতে হলি আর্টিসান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় জঙ্গিরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। হামলার পরদিন সকালে হাসনাত করিম ও তার স্ত্রী সন্তান, অপর জিম্মি তাহমিদ হাসিব খানসহ আটজন বেরিয়ে আসেন। ওই ঘটনার পর কোরিয়ান নাগরিকের করা ভিডিওতে হাসনাতের নিশ্চিন্ত ঘোরাফেরা এবং ওই সময়কার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায়, হাসনাত ও তাহমিদ ভোরের দিকের কোনও একসময় এক জঙ্গির সঙ্গে রেস্তোরাঁর ছাদে ঘুরছেন। এরপরই তাদের দুজনের দিকে ঘোরে সন্দেহের তীর। ৩ আগস্ট দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটদিনের রিমান্ডে নিয়েছেন গোয়েন্দারা। এর আগেও একবার জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘তারা বাড়ি ফেরেননি’।