গাইনি ওয়ার্ড ইনচার্জকে বরখাস্তের প্রতিবাদে স্মারকলিপি

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৫৪

জাগরণীয়া ডেস্ক

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ময়লার স্তূপে ৩১ মানবভ্রুণের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গাইনি ওয়ার্ড ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রতিবাদে স্মারকলিপি দিয়েছে সাধারণ নার্সিং কর্মকর্তারা। 

২০ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকালে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

হাসপাতালে সব নার্সিং কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর সংবলিত ওই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালের ডাস্টবিনে অপরিণত মানবদেহের গর্ভকালীন বিভিন্ন বয়সের নমুনা (যা দীর্ঘদিনের ব্যবহারে পরিত্যাক্ত) পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত উপকরণসমূহ অপসারণের প্রক্রিয়া অমানবিক ও যথাযথ না হওয়ায় কাজে অবহেলার কারণ দেখিয়ে গাইনি ওয়ার্ড ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

কিন্তু গাইনি ওয়ার্ড ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স জোৎস্না আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী,  গর্ভকালীন বিভিন্ন বয়সের অপরিণত মানবদেহের পরিত্যাক্ত নমুনাগুলো কখনোই তার তদারকি বা দায়িত্বে ছিলো না এবং এ যাবৎ গাইনি ওয়ার্ডের কোনো ইনচার্জরা এ সব নমুনা সংরক্ষণের দায়িত্বে ছিলো না। 

এ ঘটনায় সিনিয়র স্টাফ নার্স জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্তে সাধারণ সব নার্সিং কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত যুক্তিযুক্ত নয়। এ অবস্থায় জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার এবং তার প্রতি সুবিচার করার দাবি জানিয়েছেন সব নার্সিং কর্মকর্তা।

এদিকে এ বিষয়ে গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান বেগম জানান, পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্স চালুর জন্য গাইনি বিভাগের একটি কক্ষ পরিষ্কার করে লাইব্রেরি বানানোর কথা। সে অনুযায়ী স্টোর হিসেবে পরিচিত কক্ষটি পরিষ্কার করা হচ্ছিলো। কিন্তু পরিষ্কারের আগে পরিদর্শনের সময় ৈ নমুনাগুলো দেখা যায়নি কারণ সেগুলো বস্তাবন্দি ছিল। 

তিনি জানান, ঘটনার আগে তিনি এগুলো পরিষ্কার করার জন্য নার্সিং ইনচার্জ জোৎস্না আক্তারকে বলেন। এর কয়েকঘণ্টা পর তিনি জানতে পারেন যে কিছু অরগান পাওয়া গেছে। তবে তিনি স্বীকার করেন নির্ধারিত নিয়মে ঐ ভ্রুবগুলো সমাধিত করা উচিত ছিল। 

তিনি বলেন, গত ৬ মাস আগে আমি গাইনি ওয়ার্ডের দায়িত্ব নেই। কিন্তু এগুলোর বিষয়ে আদৌ আমরা কেউ জানতাম না। আমরা ছাত্র থাকা অবস্থায় একসময় এভাবে বিভিন্ন অরগান ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষরণ করা হতো।  এখন আর ওগুলোর প্রয়োজন হয় না। মেডিকেলের বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামে এগুলোর কোনো প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, ১৮ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাত পৌনে ৯টার দিকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ৩১ মানবভ্রুন ডাস্টবিনে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় খুঁজে পান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। হাসপাতালের এক ওয়ার্ড মাস্টার জানিয়েছেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ব্যবহারিক কাজে এসব মরদেহ সংরক্ষণ করার কথা। এ ঘটনায় শেবাচিম হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান বেগম এবং ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ জোৎস্না আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।​ 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত