অধ্যক্ষ মাহফুজাকে শ্বাসরোধে খুন: ২ গৃহকর্মীর নামে মামলা

নিজ বাসায় শ্বাসরোধে খুন করা হয়েছে ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এবং ময়নাতদন্তে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ঘটনায় বাসার দুই গৃহকর্মীসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সকালে মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদের চৌধুরী এ মামলা করেন। 

মামলার আসামিরা হল-রূপা ওরফে রেশমা ও স্বপ্না এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মাহফুজা চৌধুরীর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, শ্বাসরোধে মাহফুজা চৌধুরীকে খুন করা হয়েছে। দুই বা ততোধিক ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদির জানান, স্ত্রী মাহফুজাকে নিয়ে এলিফ্যান্ট রোডের সুকন্যা টাওয়ারের ১৫ ও ১৬ তলার ডুপেক্স ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। তাদের দুই ছেলেই দেশের বাইরে থাকেন। ১০ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকাল ১০টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে তিনি বাসার বাইরে যান। এসময় বাসায় রেশমা ও স্বপ্নাসহ তিনজন গৃহকর্মী ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে ১৬ তলার কলিং বেল চাপেন, কিন্তু কেউ দরজা খুলেনি। পরে ১৫ তলার কলিং বেল চাপলে বৃদ্ধা গৃহকর্মী দরজা খুলে দেন। এরপর তিনি ১৬ তলায় গিয়ে দেখেন খাটের ওপর মাহফুজার নিথর দেহ পড়ে আছে। তার লাশ কম্বল দিয়ে ঢাকা ছিল এবং পাশেই পড়ে ছিল বালিশ।

মাহফুজা চৌধুরীর স্বজনরা জানান, স্বপ্না ও রেশমা নামে দুইজন গৃহকর্মী গত মাসে এই বাসায় কাজে যোগ দেয়। স্বপ্নার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনায় আর রেশমার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারি। স্বপ্নার বয়স আনুমানিক ৩৬, রেশমার আনুমানিক ৩০ বছর। 

নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান জানান, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই আসামি স্বপ্না ও রেশমা বর্তমানে পলাতক। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

এর আগে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গৃহকর্মী রেশমা ও স্বপ্না এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হত্যার পর ওই বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে গেছে তারা। বাড়িটির নিচতলায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে দুই গৃহকর্মীকে লিফট থেকে নেমে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।