দাম্পত্য কলহের জেরে পুলিশ কর্মকর্তার 'আত্মহত্যা'
প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৩১
দাম্পত্য কলহের জের ধরে বগুড়ার ধুনট থানার সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) রাত নয়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত এএসআইয়ের নাম রোজিনা খাতুন (৩২)। তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের নান্নু মিয়ার একমাত্র মেয়ে।
পুলিশ জানায়, রোজিনা খাতুন ২০০৭ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ২০০৮ সালে একই এলাকার আবদুল লতিফ মোল্লার ছেলে স্কুলশিক্ষক হাসান আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। রোজিনা-হাসান দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি এএসআই পদে পদোন্নতি পেয়ে রোজিনা খাতুন ধুনট থানায় যোগ দেন। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে সেখানেই একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন রোজিনা। আর চাকরির সুবাদে স্বামী হাসান আলী গ্রামের বাড়িতে থাকেন।
ঘটনার সময় রোজিনার বাবা নান্নু মিয়া ও তার স্ত্রী রোজিনার বাসায় উপস্থিত ছিলেন।
নান্নু মিয়া বলেন, পাঁচ–ছয় বছর ধরে রোজিনা ও হাসানের মধ্যে কোনো একটা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। গত ৩১ জানুয়ারি হাসান আলী ওই বাসায় এসে দুদিন থেকে ২ ফেব্রুয়ারি আবার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকেই রোজিনা মনমরা হয়ে ছিলেন। ৫ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে রোজিনা গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১১টার দিকে রোজিনা মারা যান।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোহাম্মদ সালেহ জানান, পোকামাকড় দমনের জন্য ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড গ্রুপের ট্যাবলেটকে স্থানীয়ভাবে গ্যাস ট্যাবলেট বলা হয়ে থাকে। রোজিনা খাতুন এই বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেটের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তবে রোজিনার স্বামী হাসান আলী দাবি করেন, তার সঙ্গে স্ত্রীর কোনো বিরোধ ছিল না। কেন রোজিনা বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করলেন, তা তার জানা নেই।
ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকালে ময়নাতদন্ত শেষে রোজিনার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।