স্বামীকে খুন করে ওয়ার্ডরোবে রেখে কাজে গেলেন স্ত্রী
প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৯ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:৫১
স্বামী রফিকুল ইসলাম (৩৫) কে খুন করে ওয়ার্ডরোবে রেখে কাজে যান তিনি -জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই জানিয়েছেন হত্যাকান্ডের একমাত্র আসামি স্ত্রী জেবুন্নাহার।
২৬ জানুয়ারি (শনিবার) বেলা ১২টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গাজীপুরের পুলিশ সুপার শাসসুন্নাহার।
পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার উলামাকান্দি এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিষমপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে জেবুন্নাহারের বিয়ে হয়।
পুলিশ সুপার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে বলেন, নিহত রফিকুল ও তার স্ত্রী অভিযুক্ত জেবুন্নাহার শ্রীপুর পৌরসভার গিলারচালা এলাকায় আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। রফিকুল ওই এলাকার ‘হাউ আর ইউ’ নামে একটি টেক্সটাইল কারখানায় লোডার পদে আর জেবুন্নাহার একই এলাকায় মেঘনা নিট কম্পোজিট কারখানায় সুয়িং অপারেটর পদের শ্রমিক। রফিকুল বেতন পেতেন সাত হাজার টাকা আর জেবুন্নাহারের বেতন ১৩ হাজার টাকা। এই দম্পতির মারিয়া আক্তার রোজা নামের চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। সে বেশির ভাগ সময় তার নানির কাছে থাকে। ঘটনার দিনও সে বাসায় ছিল না।
বেতন নিয়ে রফিকুল-জেবুন্নাহার দম্পতির মধ্যে কলহ লেগেই থাকতো। সেই সাথে শারিরীক নির্যাতনও করতেন তার স্বামী। তার স্বামী চাইতেন জেবুন্নাহার যেন তার বেতন এনে স্বামীর হাতে তুলে দেয়। অন্যদিকে, জেবুন্নাহার তার বেতন মায়ের কাছে রাখতে চাইতেন। গত ২৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আবারও এদের মধ্যে বেতন নিয়ে কলহ বাঁধে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে স্ত্রীকে থাপ্পড় মারেন রফিকুল। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই জেবুন্নাহার ইট দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করলে তিনি খাট থেকে নিচে পড়ে যান। পরে উপর্যুপরি আরও আঘাত করলে রফিকুল অচেতন হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে গামছা দিয়ে স্বামীর শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ওয়ার্ডরোবে রেখে কারখানায় কাজে চলে যান তিনি। পাশের বাসায় থাকা তার বোনের ঘরে রাতে খাবার খেয়ে মেয়েকে নিয়ে ঘরে ফিরেন তিনি। রাত ১১টার দিকে লাশ ওয়ার্ডরোব থেকে বের করে নৃশংসতা চালান তিনি। বঁটি দিয়ে দুই হাত কুনই থেকে, দুই পা হাঁটু থেকে এবং ঘাড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন পৃথক স্থানে ফেলার পরিকল্পনা করেন। পা দুটি অদূরে টয়লেটের পাশে, মাথা আর হাত দুটি নর্দমায় এবং দেহ বস্তায় ভরে পাশের বাঁশঝাড়ে ফেলে দেন।
২৫ জানিয়ারি (শুক্রবার) শ্রীপুর পৌরসভার গিলারচালা এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম (৩৫) এর ছয় টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই জেবুন্নাহারকে আটক করে পুলিশ।
শ্রীপুর থানার ওসি মো. জাবেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় রফিকুলের বাবা লতিফ বাদী হয়ে জেবুন্নাহারকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় জেবুন্নাহারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।