“দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার করা হোক”
প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫০ | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৪
“আমরা প্রশাসনকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, দেরি না করে প্রকৃত আসামিদের এজাহারভুক্ত করে গ্রেপ্তার করা হোক এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।”-বললেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
গত ৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) দুপুরে ভোটের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গণধর্ষণের শিকার ঐ নারীর সঙ্গে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স।
তিনি আরও বলেন, “আমরা নির্যাতিতাকে আশ্বস্ত করেছি, বাম গণতান্ত্রিক জোট তার পাশে আছে।”
দোষীদের বিচারের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারে নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। সেই সাথে ঘটনা যেন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না হয় সেদিকে সজাগ থাকার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এসময় বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশ চক্রবর্তী, বজলুর রশিদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের পলিটব্যুরোর সদস্য আব্দুর সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, সিপিবির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেয়ায় ভোটের দিন রাতে স্বামী ও চার সন্তানকে বেঁধে চল্লিশোর্ধ্ব ঐ নারীকে আওয়ামী লীগের ১০/১২ কর্মী মিলে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী ঐ নারী জানান, ভোটের দিন আওয়ামী লীগের কর্মীরা নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য জোর করছিল কিন্তু আমি তাদের কথা না শুনে ধানের শীষে ভোট দিই। এ নিয়ে আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে ঐ দিন মধ্যরাতে ১০/১২ ঘরের বেড়া কেটে হানা দেয় এবং আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও অকথ্য নির্যাতন চালায়। এ ব্যাপারে মুখ খুললে স্বামীকে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় তারা।
ওই নারীর স্বামী জানান, ৩০ ডিসেম্বর রাতে তার স্ত্রীকে মারাত্মক জখম করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে এবং ৪০ হাজার টাকা, সোনার গয়না ও অন্যান্য দামী জিনিসপত্র নিয়ে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়।
প্রতিবেশীরা তাদের চিৎকার শুনে প্রথমে একজন ডাক্তার ডেকে আনেন কিন্তু ঐ নারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী রুহুল আমিনসহ ১০ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করলে রহস্যজনকভাবে পুলিশ রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দেয়।
গত ২ জানুয়ারি (বুধবার) চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঐ নারীকে দেখতে গেলে ভুক্তভোগী ঐ নারী বলেন, রুহুল আমিনের সাঙ্গপাঙ্গরাই আমার উপর নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু পুলিশ এজাহার থেকে রুহুল আমিনের নামই কৌশলে সরিয়ে দিয়েছে। ডিআইজি এ সময় তাকে আশ্বস্ত করেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে রুহুল আমিনের নাম মামলা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে-এ ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে এবং রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানানো হয়।
এরপরই ২ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।