জামিন পেলেন অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:০২

অনলাইন ডেস্ক

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় করা মামলায় অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা জামিন পেয়েছেন।

৯ ডিসেম্বর (সোমবার) ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ এই আদেশ দেন।

হাসনা হেনার পক্ষে জামিনের আবেদন করে আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকার আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা জড়িত ছিলেন না। তিনি পরিস্থিতির শিকার। তাকে জামিন দেওয়া হলে তিনি পালাবেন না। শিক্ষক হাসনা হেনার জামিনে তদন্তের গতি বিঘ্নিত হবে না।

ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির এক জরুরি সভায় ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখাপ্রধান জিনাত আখতার ও অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে বরখাস্ত করা হয়। সেই সাথে মন্ত্রনালয় তাদের এমপিও সুবিধা বাতিল করেছে। 

উল্লেখ্য, নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মামলা করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী। গত ৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় এ মামলাটি করেন তিনি। মামলার পরের দিন ৫ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে অরিত্রীর শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে উপস্থিত করা হলে তার পক্ষে জামিনের আবেদন করা করেন শিক্ষক হাসনা হেনার আইনজীবিরা। তবে আদালত তা নাকচ করে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল অরিত্রীর। গত ২ ডিসেম্বর পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করায় নকলের অভিযোগ উঠে অরিত্রীর বিরুদ্ধে। এরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষ দেখা করতে বলে অভিভাবককে। ৩ নভেম্বর অরিত্রীর মা ও ছোট বোনসহ স্কুলে গেলে প্রথমে প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করি। তিনি সেসময় অকথ্য ভাষায় অপমান করেন এবং রুম থেকে বের করে দেন। সেই সাথে অরিত্রীর টিসি নিয়ে যেতে বলেন। এসময় অরিত্রী ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে ক্ষমা চায় কিন্তু তিনি কোন কথা-ই শোনেননি। 

এরপর প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌসের সাথে দেখা করলে তিনি একইভাবে অপমান করেন এবং রুম থেকে বের করে দেন। সেই সাথে স্কুল থেকে টিসি নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। যুগপৎ অপমানে কেঁদে ফেলি আমি। বাবার অপমান সইতে না পেয়ে অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের রুম ত্যাগ করে। বাসায় এসে দেখি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছে সে। মুমূর্ষু অয়াবস্থায় আরিত্রীকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।