পারিবারিক বিরোধেই আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর বাসে হত্যা

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৫১

জাগরণীয়া ডেস্ক
নিহত জরিনার জামাতা নূর ইসলাম, নূরের মা আমেনা বেগম

ঢাকার আশুলিয়ায় বাবাকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে মেয়েকে হত্যার ঘটনা পারিবারিক বিরোধেই ঘটেছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।

১৭ নভেম্বর (শনিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ তথ্য জানায়।

পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরেই বাসে তুলে অভিনব কায়দায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটনো হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য বাসচালকের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় একটি সমঝোতা হয়েছিল এবং পুরো বিষয়টি সঙ্গে জড়িত ছিলেন নিহত জরিনার মেয়ে রোজিনার স্বামী নূর ইসলাম। অথচ এই নূরই প্রথম তার শ্বাশুড়ির নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।  এখন পিবিআইর তদন্তে নিহত জরিনার জামাতা নূরই আসামি হিসেবে ধরা পড়লেন।

এ ঘটনায় ব্যবহার করা বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। তবে চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত জরিনার মেয়ে রোজিনার স্বামী নূর ইসলাম, নূরের মা আমেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। পাশাপাশি নূর ও রোজিনার বিয়ের ঘটক স্বপন নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ঐ দিন জরিনা ও আকবরকে বাসে তুলে দিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় আশুলিয়া থেকে সিরাজগঞ্জ ফেরার পথে টাঙ্গাইলগামী একটি বাস থেকে বাবা আকবর আলী মণ্ডলকে (৭০) ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয় মেয়ে জরিনা খাতুনকে (৪৫)। সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানার খাস কাওলিয়া গ্রামের নিবাসী ছিলেন। 

পারিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জরিনা খাতুনের স্বামী জহির মোল্লা বেঁচে নেই। কিছুদিন আগে জরিনা খাতুনের মেয়ে রোজিনা সন্তানের জন্ম দিলে নবজাতককে দেখতে বৃদ্ধ বাবা আকবর আলী মণ্ডলকে সাথে নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে আশুলিয়ার গাজীরচট মুন্সিপাড়ায় রোজিনা ও নূরের বাড়িতে বেড়াতে আসেন জরিনা খাতুন। সেই সাথে এসেছিলেন মেয়ের পারিবারিক কলহ মেটাতে।

ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত স্বপন, আকবর ও জরিনাকে সিরাজগঞ্জে ফেরার জন্য আশুলিয়ার ইউনিক এলাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসে উঠিয়ে দেয়।

বৃদ্ধ আকবর বলেছিলেন, পথে বাসে তাকে মারধর করা হয় এবং বাসটি ঘুরিয়ে আবার আশুলিয়া যাওয়ার সময় তাকে আশুলিয়া ব্রিজের কাছে ফেলে দেয়া হয়। তিনি তখন টহল পুলিশকে বিষয়টি অবগত করলে তারা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মরাগাং এলাকায় মহাসড়কের পাশে জরিনার মরদেহ উদ্ধার করে। জরিনার শরীরে কোনো ক্ষত না থাকলেও গলায় কালো দাগ ছিল।

সেদিন রাতেই আশুলিয়া থানায় জরিনা খাতুনের জামাতা নূর ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ায় আসার পর তা আলোড়ন তুলে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে কেসটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে হস্তান্তর করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যেই পিবিআই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে সংবাদ সম্মেলন করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত