আশুলিয়ায় বাস থেকে বাবাকে নিক্ষেপ, মেয়েকে খুন
প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৪৯
আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে মারধর করে ফেলে দিয়ে মেয়ে জরিনা খাতুন (৪৫)কে খুন করে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানার খাস কাওলিয়া গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে।
৯ নভেম্বর (শুক্রবার) রাতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের আশুলিয়ার মরাগাঙ এলাকা থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় বাস বা জড়িত কেউ এখনো আটক হয়নি।
পুলিশ ও নিহত নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জরিনা খাতুনের স্বামী জহির মোল্লা বেঁচে নেই। কিছুদিন আগে জরিনা খাতুনের মেয়ে সন্তানের জন্ম দিলে নবজাতককে দেখতে মেয়ে জরিনাকে নিয়ে বৃদ্ধ বাবা আকবর আলী মণ্ডলকে (৭০) আশুলিয়ার গাজীরচট মুন্সিপাড়ায় বেড়াতে আসেন। বিকেল পাঁচটার দিকে তারা সিরাজগঞ্জে যাওয়ার উদ্দেশে আশুলিয়া থেকে বের হন তারা। জরিনা খাতুনের ভাই স্বপন সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ইউনিক বাসস্ট্যান্ডে টাঙ্গাইলগামী একটি বাসে তুলে দেন। বাসের নাম তিনি জানাতে পারেননি। বাসে ওই সময় যাত্রীর আসনে কয়েকজন বসে ছিলেন। পুরো বাসটি প্রায় ফাঁকা ছিল।
রাত আটটার দিকে জরিনা খাতুনের জামাতা নুরুল ইসলাম নানাশ্বশুর আকবর আলীর মুঠোফোনে কল দিয়ে জানতে পারেন, আশুলিয়া বাজারসংলগ্ন এলাকায় সেতুর কাছে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে বাসটি জরিনা খাতুনকে নিয়ে চলে গেছে। তিনি মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। সঙ্গে সঙ্গে নুরুল ইসলাম আশুলিয়া বাজারের দিকে রওনা দেন। তিনি সেখানে গিয়ে লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন, আকবর আলী হতভম্ব হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি এর–ওর কাছে গিয়ে ঘটনার বর্ণনা করছিলেন। তিনি তার পরিবার সম্পর্কেও কোনো তথ্য দিতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে সেখানে পুলিশ এসে পৌঁছায়।
পরে রাত ১০টার দিকে আশুলিয়া টহল পুলিশ আশুলিয়া বাজার থেকে ৫০০ গজ দূরে মরাগাঙ এলাকায় রাস্তার পাশে জরিনা খাতুনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে।
পুলিশ ধারণা করছে, বাসটিতে যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা ছিল। বাসটি টাঙ্গাইলগামী হলেও অপরাধের উদ্দেশ্যে সেটি উল্টো দিকে ঘুরে আশুলিয়া বাজারের দিকে গেছে। ছিনতাই করার মতো কোনো অর্থ জরিনা খাতুন বা তার বাবার কাছে ছিল না। তা ছাড়া আকবর আলীর মুঠোফোনটিও নেয়নি দুর্বৃত্তরা। সে ক্ষেত্রে জরিনা খাতুনকে ধর্ষণের উদ্দেশে বাসটি ঘোরানো হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, জরিনা খাতুনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রাতেই জরিনা খাতুনের জামাতা নুরুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।