২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা
প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:৩৩
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার জীবিত ৪৯ আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিচারক। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
১০ অক্টোবর (বুধবার) পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় ৩১ আসামিকে কারাগারে হাজির করা হয়। বেলা ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে আলোচিত এ মামলায় মোট ৩১ জন আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সকালে ঢাকায় আনা হয়েছে। রায় পড়ার শুরু করার আগে তাদেরকে নাজিমুদ্দিন রোডের অস্থায়ী বিশেষ আদালতে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুও রয়েছেন। পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাদেরকে আদালতে আনা হয়।
আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকাসহ রাজধানীতে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। রায় ঘিরে আজ সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী।
ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা হয় ৫২।
৫২ জন আসামির মধ্যে জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক এবং ৩১ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন।
পলাতক ১৮ আসামি হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ, হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হানিফ, ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, ডিএমপির সাবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, হুজি সদস্য মাওলানা তাজউদ্দিন, মহিবুল মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন, খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, ইকবাল, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন ওরফে দোলোয়ার হোসেন ওরফে জুবায়ের, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহম্মদ বাবু।