‘মাহমুদার হত্যাকারীকে দেখে ফেলায় খুন হয় শিশু মামুন’
প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৫০
গাজীপুরে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের মামলার প্রাথমিক তদন্তের বরাতে পুলিশ বলছে, মাদ্রাসা পরিচালকের স্ত্রী মাহমুদাকে হত্যার সময় তা দেখে ফেলায় শিশু মামুনকেও খুন করা হয়েছে। যদিও মাহমুদাকে হত্যার কারণ এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) ভোরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনায় ‘হুফ্ফাজুল কোর-আন মাদ্রাসায়’ কুপিয়ে খুন করা হয় মাদ্রাসা পরিচালকের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (২৫) ও নুরানী ক্লাসের এক ছাত্র মামুন (১০)কে । এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাতে মাহমুদার বাবা হানিফ গাজী গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানায় মাহমুদার স্বামী ইব্রাহীম খলিলসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। নিহত মো. মামুনের বাবা শহিদ মিয়া ও একই অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ একটি মামলাই করেন।
এ প্রসঙ্গে বাসন থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, দুইটি হত্যাকাণ্ড হলেও আইন অনুযায়ী একটি মামলা নেওয়া হয়েছে। এতে আইনগত কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে, পুলিশ এই মামলায় মাদ্রাসা পরিচালক ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেপ্তার করেছে।
খলিলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ওসি মুক্তার বলেন,মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় হলে তিনি মাদ্রাসার সকল ছাত্রদের ডেকে তুলে নামাজ পড়ার জন্য মাদ্রাসার বাইরে অবস্থিত মসজিদে পাঠিয়ে দেন খলিল। কিন্তু শিশু মামুন ঘুম থেকে উঠে মাদ্রাসার টয়লেটে যাওয়ায় তার যেতে দেরি হয়। সবাই চলে গেছে ভেবে খুনিরা মাহমুদাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় মামুন টয়লেট থেকে বের হয়ে খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ করেন, মাহমুদা আক্তারকে বিয়ে করার সময় ইব্রাহীম অন্যজনকে বাবা-মা সাজিয়ে বিয়ে করেছেন। পরে তারা জানতে পারেন এর আগেও ইব্রাহিম আরেকটি বিয়ে করেছিলন। এর মধ্যে মাহমুদা দুটি ছেলে হোযাইপা (৫) ও আবু হোরাইয়ার (৩) জন্ম দেয়। মাঝে মাঝে মাহমুদা বাপের বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করতো কিন্তু জিজ্ঞাসা করলে কিছুই বলত না।
এজহারে আরও বলা হয়, যে দা ও বটি দিয়ে মাহমুদা ও মামুনকে কুপিয়েছে সেই দা ও বটি ঘটনার আগের দিন মাগরিবের নামাজের পর মাদ্রাসার ছাত্রদের মাধ্যমে ধার করিয়েছে ইব্রাহিম। পুলিশ সেই রক্তমাখা দা বাসার খাটের নিচ থেকে মশারি দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তাছাড়া প্রতিদিন ভোরবেলা নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে মাদ্রাসার প্রধান গেইটে তালা দিয়ে যেতেন ইব্রাহিম; কিন্তু ঘটনার দিন তালা না দিয়ে চলে যান।
ওসি মোক্তার হোসেন নিহত মাহমুদার গলা, মুখ ও কানে এবং মামুনের ঘাড়, মাথা ও পিঠে ধারোলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘরের ভেতর থেকে রক্তমাখা একটি দা ও দা ধার দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি কাঠের খন্ড উদ্ধার করা হয়েছে।