শিশু আকিফার মৃত্যু: বাসের চালক ফের গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:০৭
কুষ্টিয়ায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়া শিশু আকিফার মৃত্যুর ঘটনার প্রধান আসামি গঞ্জেরাজ পরিবহনের চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকনকে ফের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১২।
১২ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাতে ফরিদপুর জেলা সদরের বঙ্গেশরদী এলাকা থেকে কুষ্টিয়া র্যাব-১২’র একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
১৩ সেপ্টেম্মবর (বৃহস্পতিবার) কুষ্টিয়া র্যাব-১২’র কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১২-সিপিসি-১ কুষ্টিয়ার কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মোহামেনুর রশিদ।
তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর শিশু আকিফা হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাস চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করার প্রক্রিয়া চলছে। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর গঞ্জেরাজ পরিবহনের মালিক মো. জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল র্যাব। ১০ সেপ্টেম্বর তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতে একই সময়ে গঞ্জেরাজ বাসের চালক মহিদ মিয়া আত্মসমর্পণ করে। এরপর তাদের দু’জনের আইনজীবী আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন দেন।
১১ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমন কাদেরী মামলাটি ৩০২ ধারায় সংযোজন করার জন্য একই আদালতে আবেদন করেন। আবেদনটি আদালত মঞ্জুর করেন। একই সাথে তাদের জামিন আবেদন বাতিলের আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয় বাসটির চালক মহিদ মিয়াকে।
শিশুটি আকিফার বাবা ব্যবসায়ী হারুন জানান, গত ২৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরগামী গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। ঠিক সে সময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে এক বছরের শিশুকন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ন ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে এসে রিনাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান। এতে মায়ের কোল থেকে রাস্তার ওপর ছিঁটকে পড়ে আহত হয় আকিফা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাথায় আঘাত পাওয়ায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। ২৯ আগস্ট সকাল ১১টায় সেখানে আকিফা অস্ত্রপচার করা হয়। পরে ৩০ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে, বাসের ধাক্কা দেওয়ার ভিডিওটি স্থানীয় একটি দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লে তা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফুঁসে ওঠে সচেতন মহল। প্রতিবাদে বুধবার চৌড়হাস মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা।
মানববন্ধনে ঘাতক গঞ্জেরাজ পরিবহনের চালককে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এরপর ওই শিশুর পিতা মো. হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে বাস চালক, হেলপার ও মালিকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (কুষ্টিয়া মডেল থানার মামলা নং-৪১, তাং-৩০-০৮-২০১৮, ধারা-২৭৯/৩৩৮-ক/৩০৪-খ দণ্ডবিধি)।