‘ইভিএম চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না’
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৯ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:০৭
ইভিএম নিয়ে আসার জন্য আমি সবসময় পক্ষেই ছিলাম, এখনো আছি। তবে এটাও ঠিক এটা তাড়াহুড়ো করে চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। কারণ একটা প্র্যাকটিসের ব্যাপার আছে- বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। নেপালে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আহবান করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইলেকশনটাকে স্বচ্ছ করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সবই কিন্তু আমরাই করেছি। কারণ মানুষের ভোটের অধিকারটা মানুষের হাতেই থাকুক। কাজ করেছি মানুষের জন্যে, ভোট দিলে দিল না দিলে নেই, তাতে আমার কিছু আসে যায় না।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম ডিজিটাল বাংলাদেশেরই একটা পার্ট। আমরা এখন টাকা পাঠাচ্ছি অনলাইনে, গাড়ি কিনছি অনলাইনে, সবজি কিনছি অনলাইনে। এটা ঠিক যে প্রযুক্তি আমাদের সবসময়ই সুবিধা করে দেয় তা কিন্তু নয়।
তিনি আরও বলেন, আজকে ইভিএমের বিরুদ্ধে বিএনপি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। ভোটের রাজনীতিতে কারচুপি করা এটা তো স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিল জিয়াউর রহমান। আজকে বিএনপি যখন ভোটের কারচুপি নিয়ে কথা বলে তখন তাদের তো জন্মলগ্নটা দেখা দরকার। কোন জন্মের মধ্যদিয়ে তারা এসেছিল? ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের কথা সবার মনে আছে। যাদের জন্মটাই কারচুপির মধ্যদিয়ে তারা আবার কারচুপি নিয়ে কথা বলে। ইভিএম নিয়ে তারা অভিযোগ করবেই, কারণ কারচুপির একটা টেকনিক তাদের জানা আছে। বহু টেকনিক তারা ইলেকশন কারচুপিতে জানে। ইভিএম চালু হলে ব্যালট পেপার একটার বদলে দুটো নিতে পারবে না। সে জন্যে তারা আপত্তি জানাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন মামলা দিয়েছিল। আমার একটা মামলাও কিন্তু তোলে নাই। সবগুলো তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে হবে বলে আমি বলেছিলাম। সেগুলো প্রমাণ করতে পারে নাই।
বিমসটেক সম্মেলনে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি জানান, আমরা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, বাংলাদেশ বিমসটেকের মতো সহযোগিতামূলক প্লাটফর্মের সঙ্গে কাজ করে যাবে।
এতে প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী, নেপালের প্রধানমন্ত্রী শর্মা অলি, ভুটানের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শেরিং ওয়াংচুকসহ অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ করেন এসব বৈঠকে আলোচনার বিষয়াদিও।
বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক বড় প্লাটফর্মের আলোচনায় মিয়ানমারের সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি এসেছে কি-না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমসটেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় উঠেছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি। এছাড়া সম্মেলনের ফাঁকে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও এ নিয়ে কথা হয়েছে।
সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন গণভবন থেকে এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’ (বিমসটেক) সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং ভুটানের সরকার প্রধান দাশো শেরিং ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। দুই দিনের সরকারি সফর শেষ করে শুক্রবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।