হাতি মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নারীর মৃত্যু
প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৩:০৫ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৩:১১
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ দিয়ে করা হাতি মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দিলোয়ারা বেগম (৪৮) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সকালে পুকুরিয়া ইউনিয়নের সবুজপাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
দিলোয়ারা বেগমের স্বামী নুরুল আলম বলেন, কিভাবে মারা গেছে জানি না। কেউ বলছে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আবার কেউ বলছে স্ট্রোক করে মারা গেছে। কারো বিরুদ্ধে আমাদের কোনো ধরনের অভিযোগ নেই।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে পুকুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বন্য হাতির তাণ্ডব বেড়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। হাতির আক্রমণের ভয়ে সবুজপাড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আজিমুল ইসলাম ভেদু তার বাড়ির আশপাশে বিদ্যুতের তার দিয়ে হাতি মারার ফাঁদ পাতেন। জনসাধারণের নিত্য ব্যবহার্য্য পুকুরের পাড়েও যে ওই ফাঁদ পাতা হয়েছে গ্রামের মানুষ তা জানত না। একই পাড়ার নুরুল আলমের স্ত্রী দিলোয়ারা বেগম বৃহস্পতিবার সকালে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে হাতির জন্য পাতা ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
হাতির ফাঁদ পাতা আজিমুল ইসলাম ভেদু বলেন, দিলোয়ারা বেগমের মৃত্যুটা দুর্ঘটনাজনিত। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, দিলোয়ারা বেগম মারা যাওয়ার খবর গ্রামবাসী আমাকে সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়েছে। তারা বলেছে, বিদ্যুৎ দিয়ে বানানো হাতি মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দিলোয়ারা বেগম মারা গেছেন। এর বেশি কিছু জানি না।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. ফারুক বলেন, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রচার করছে যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। এ রকম আমি কিছু দেখিনি। তবে বন্য হাতির ভয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কে আছে।
কালীপুর রেঞ্জের রেঞ্জার রইসুল ইসলাম বলেন, বন্য প্রাণী দমনের জন্য কেউ ফাঁদ পাতলে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ। বন্য প্রাণী হত্যা করা যাবে না।
খবর পেয়ে বাঁশখালী থানার অধীন রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুল মোনাফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, দিলোয়ারা বেগমের পরিবারের সদস্যরা কোনো অভিযোগ করেনি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছি।
বাঁশখালী থানার ওসি সালাহ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে এসআই আব্দুল মোনাফ ঘটনা তদন্ত করেছেন। তিনি জানতে পেরেছেন যে ওই নারী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তবে হাতি মারার ফাঁদে আটকা পড়ে মারা গেছেন, এ রকম অভিযোগ পরিবারের কেউ করেনি।