শাজনীন হত্যা মামলায় শহীদুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০১৬, ১৫:২৩

অনলাইন ডেস্ক

ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে একজনের সাজা বহাল রেখে চারজনকে খালাস দিয়েছে আপিল বিভাগ। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত শহীদুল ইসলামের (শহীদ) শাজনীনদের বাড়ির গৃহপরিচারক হিসেবে কাজ করত। 

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। গত ১১ মে আপিল শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

রাজধানীর গুলশানে শাজনীনদের বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীনকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

১৯৯৮ সালের শাজনীন হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ বছর পর গত ২৯ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ফাঁসির আদেশ পাওয়া পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শুরু হয়েছিল। 

তিন সদস্যের ওই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। গত ৫ এপ্রিল বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীকে যুক্ত করে পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে শুনানি নেওয়া হয়। গত ১১ মে ওই বৃহত্তর বেঞ্চেই আসামিদের আপিল শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ রাখা হয়। 

বাদীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিন, এ এস এম আবদুল মবিন ও সরোয়ার আহমেদ। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন শাজনীন তাসনিম রহমান। সে ছিল স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।

চার বছর পর ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসানসহ ছয়জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। গৃহপরিচারক শহীদুল ইসলাম (শহীদ), হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডলকেও ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

পরে এই মামলার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে যায়। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট পাঁচ আসামি হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। তবে ফাঁসির আদেশ পাওয়া শনিরামকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন ফাঁসির আদেশ পাওয়া চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন।

২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন।