রাতভর গণধর্ষণ; তিন ধর্ষকের যাবজ্জীবন

প্রকাশ | ০১ আগস্ট ২০১৬, ০১:২৪

অনলাইন ডেস্ক

শেরপুরে কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের ঘটনায় তিন ধর্ষকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ৩১ জুলাই রবিবার বিকেলে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ কিরণ শংকর হালদার এ সাজার রায় ঘোষণা করেন। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলো, শহরের শেখ হাটি এলাকার চাঁন মিয়া (৩৫), নজু শেখ (২৭) ও মো. শামীম মিয়া (২২)। রায়ে দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়া নামে দু’জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

রায়ে সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় যাবজ্জীবন সাজা ও ৫০ হজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। 

সেইসাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে আদালত। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, গণধর্ষণের শিকার ওই কলেজ ছাত্রী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কালাপাগলা গ্রামের বসিন্দা এক চাল ব্যবসায়ীর মেয়ে। সে শেরপুর শহরের শেখহাটি মহল্লায় বোনের সাথে ভাড়া বাসায় থেকে নাগপাড়া এলাকার বিজ্ঞান কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়তো। 

২০১৫ সালের ২৬ জুলাই রাত নয়টার দিয়ে ইজিবাইকে বাসায় ফেরার পথে শহরের নারায়নপুর এলাকার এটিআই মোড় থেকে কতিপয় দূর্বত্ত ওই কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গাজীরখামার এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে রাতভর গণধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় ওই কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। 

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার তৎকালীন ওসি মো. মাজহারুল করিম তদন্ত শেষে শেখ হাটি এলাকার চাঁন মিয়া, নজু শেখ, মো. শামীম মিয়া, মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়া নামে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। আদালত ৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রবিবার চাঁন মিয়া, নজু শেখ, মো. শামীম মিয়াকে পৃথক দু’টি ধারায় যাবব্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয় এবং মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, আসামীপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার একপর্যায়ে আসামীরা বাদী পক্ষকে মামলাটি আপোস করতে বাধ্য করলেও আদালত ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় আসামীদের বিরুদ্ধে এ সাজার রায় ঘোষণা করেছে। এ রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অপরদিকে, আসামী পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল মানসুর স্বপন বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।