টাকার জন্যই খুলশীর সেই মা-মেয়েকে হত্যা
প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০১৮, ১৭:১৪
টাকার জন্য ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগমকে (৬৭) বসার পিঁড়ির আঘাতে হত্যা করেন তারই ভাইয়ের ছেলে মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তী (৩০)। আর হত্যার ঘটনা দেখে ফেলায় দাদি মনোয়ারা বেগমকেও (৯৭) হত্যা করেন তিনি।
২৪ জুলাই (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য দিয়েছেন এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তী।
জবানবন্দিতে মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তী উল্লেখ করেছেন, ঘটনার দিন ব্যবসার জন্য ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগমের কাছে টাকা চাইলে তিনি রাজি হননি। পরে মুশফিকুর রহিম নিজে আলমারি ভেঙে ব্যাংকের চেক বই বের করেন এবং চেকে ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগমকে স্বাক্ষর করতে বললে এতে রাজি হননি তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বসার পিঁড়ি দিয়ে ফুফু মেহেরুন নেসাকে আঘাত করেন মুশফিকুর। পরে এ ঘটনা দেখে ফেলায় দাদি মনোয়ারা বেগমকেও শ্বাসরোধে করে হত্যা করেন এবং পরে দুইজনের মরদেহ পানি রিজার্ভ ট্যাংকে ফেলে দেন।
লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ একাই করেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস খান বলেন, বাবার মৃত্যুর পর ব্যাপ্তী ফুফুর কাছে বড় হন। সম্প্রতি ফুফুর অমতে বিয়ে করায় তিনি আলাদা বাসা নিয়ে থাকতেন। মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যাপ্তী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি একাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবী করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জু্লাই খুলশী থানার আমবাগান ফ্লোরাপাস রোডে মেহের মঞ্জিলের রিজার্ভ ট্যাংকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত দুইজন হলেন- চাঁদপুর জেলার মতলব পুরানবাজার এলাকার ফজলুর রহমানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৯৭) ও তার মেয়ে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকতা শাহ মেহেরুন নেসা বেগম (৬৭)। মেহেরুন নেসা রুপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ছিলেন। কয়েকবছর আগে তিনি অবসরে যান। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
পরে মনোয়ারা বেগমের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (আসামির সৎ বাবা) বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস খান বলেন, ঘটনার পর থেকে ব্যাপ্তির আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তির সহায়তায় তার জড়িতের বিষয়ে নিশ্চিত হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।