খালেদার জামিন প্রশ্নে আপিলের শুনানি শেষ, আদেশ মঙ্গলবার
প্রকাশ | ১০ মে ২০১৮, ১৪:০৩
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ, দুদক ও আসামি পক্ষের আপিল শুনানি শেষ। আদেশের জন্য আগামী ১৫ মে (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
৯ মে (বুধবার) সকাল সোয়া ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়াকে দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মঙ্গলবার শুনানি শেষ করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী শুনানি শুরু করেন। তার অসমাপ্ত শুনানি বুধবার করবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন তিনি অসুস্থ। তার হাঁটুতে অপারেশন হয়েছে। এটি যদি সত্য হয়ে থাকে, খালেদা জিয়ার হাঁটার দরকার কি? তার বিশ্রামে থাকা প্রয়োজন। তিনি তো কারাগারে বিশ্রামে রয়েছেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেলের শুনানির এখতিয়ারই নেই। আইন অনুযায়ী, দুদকের মামলা শুনানির জন্য নিজস্ব আইনজীবী টিম থাকবে।
শুনানিতে মাহবুবে আলম মামলার নথি পাঠ করে আদালতকে বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা বিচারিক আদালতে চলাকালে ৬৭টি তারিখের মধ্যে খালেদা জিয়া মাত্র আট দিন হাজির হয়েছিলেন। আবার হাজির হলেও বারবার সময় আবেদন করেছেন। মামলার পাঁচ বছর পর চার্জ গঠন হয়। এর পর তারা কয়েকবার হাইকোর্টে মামলা করে সময় ব্যাহত করেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের মাঝে আপত্তি তুলে ধরে বলেন, তিনি রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি এসব কী পড়ছেন?’ এ পর্যায়ে এজলাসে উপস্থিত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা উচ্চ স্বরে ইয়েস...ইয়েস বলে জয়নুল আবেদীনকে সমর্থন জানান এবং তারা হৈচৈ শুরু করেন।
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তারা এমন করলে কিভাবে শুনানি করবো?’ তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা এমন করলে কিন্তু শুনানি করতে পারবো না।
পরে আদালতের পরিস্থিতি শান্ত হলে অ্যাটর্নি জেনারেল পুনরায় শুনানি শুরু করেন। পরে আপিল শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে পরের দিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক আপিল করে। পরে ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ জামিনের স্থগিতাদেশ দেন। পরদিন ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং আসামিদের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়।